ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন,কোনো বিদেশি শক্তি আপনাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, তাই দূতাবাসে ছুটাছুটি করে কোনো লাভ হবে না।
শনিবার বগুড়ার বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলা সম্মেলনে ভিডিওি কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিবকে ‘সরকারবিরোধী প্রচারণা’ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, একমাত্র ভোটের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এর কোনো বিকল্প নেই। অযথা দূতাবাসে ছুটাছুটি করে, গোপন সভা করে, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকে দিয়ে কোনো লাভ নেই। সময় হলেই নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী।
“জনগণ যে রায় দেবে তা মেনে নেওয়ার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। তাই বলি জনগণের কাছে যান, বিদেশি শক্তি আপনাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। যে অর্থ সরকারবিরোধী প্রচারণায় ব্যয় করছেন, লবিস্ট নিয়োগ করছেন সে অর্থ জনগণের জন্য ব্যয় করুন।”
বিএনপির দলের ভেতরে ‘গণতন্ত্রের চর্চা নেই’ দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যাদের দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই তারা দেশে কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে?”
দলটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বিএনপি নেতারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের কথা বলেন। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও জন্ম থেকে অগণতান্ত্রিক চর্চাই তাদের ঐতিহ্য। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা, ইনডেমনিটি অধ্যদেশ জারি করা, সংবিধানে যুক্ত করা, জেলহত্যা, গ্রেনেড হামলা, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যাসহ মানবতাবিরোধী এমন কোনো জঘন্য কাজ নেই যা বিএনপি করেনি।
“জন্মলগ্ন থেকে ধারাবাহিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ তারা করে আসছে। জনগণ মনে করে, মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।”
বিএনপিই দেশের রাজনীতিতে ‘মাস্তানতন্ত্র’ চালু করেছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির অতীত ষড়যন্ত্রের অতীত। তাদের হাতে রক্তের দাগ, পোড়া মানুষের গন্ধ। কারা হিজবুল বাহারে নিয়ে মেধাবী ছাত্রদের বিপথে নিয়ে গিয়েছিল? কারা অস্ত্র হাতে তুলে দিয়ে হাজার হাজার মেধাবী তরুণকে বিপথগামী করেছিল?
“মাস্তানি তো তারাই করে। মাস্তানি করে তারা জনবিচ্ছিন্ন। যাদের রাজনীতির সাথে মাটি ও মানুষের সম্পর্ক নেই, ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চর দখলের মতো হল দখলের রাজনীতি তো বিএনপির আমলে দেখা গেছ।”
বক্তব্যে নিজের দলের নেতাকর্মীদের দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “একটি বড় রাজনৈতিক দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রতিযোগিতা হতে হবে সাংগঠনিক নীতির আলোকে, শৃঙ্খলার মধ্যে। কোনোভাবে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।”
দলীয় নেতাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, “দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে। দলের শৃঙ্খলা না মানলে যত বড় নেতা, জনপ্রতিনিধি হোন না কেন দল ছাড় দেবে না। যারা দলের সিদ্ধান্ত না মেনে বিদ্রোহ করেছিল তারা জয়ী হোক বা পরাজিত হোক তাদের এবার পৌরসভায় আমরা মনোনয়ন দেইনি। এটা তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত শেখ হাসিনার কঠোর বার্তা। তাই দল করলে শৃঙ্খলা মানতে হবে।”
সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনে দলীয় প্রধানের নির্দেশনার কথা জানিয়ে কাদের বলেন, “মনে রাখতে হবে, দল ভারী করার জন্য নিজের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করা যাবে না। দলকে শক্তিশালী করতে হলে নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের দলে টেনে আনতে হবে, কাজে লাগাতে হবে। চিহ্নিত চাঁদাবাজ, দখলদার, মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, নারী অবমাননাকারী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের দলে টানা যাবে না।”
আদমদিঘী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কুদরত ই ইলাহীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল আলম রিপু উপস্থিত ছিলেন।