ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে চার সদস্যের ছিনতাই চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। কাপড় ব্যবসায়ীর উপর বর্বরোচিত জখমের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এই তথ্য পায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ইতোমধ্যে চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের রবিবার সন্ধ্যায় আদালতে তোলা হয়।
রবিবার বিকেলে (৩ জানুয়ারী) পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রেজওয়ান ইসলাম (২২), উপজেলা শহরের মাথাভাঙ্গা এলাকার নাহিদ হাসান মিঠু (২২) ও মুদিপাড়া এলাকার বিশাল রায় (২১)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৫ ডিসেম্বর ভোরে জলঢাকা শহরের কাপড় ব্যবসায়ী শাহ মো. আরিফ চৌধুরীকে হত্যার উদ্দেশে ছুরি চাপাতি দিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
কয়েকজন মাইক্রোবাস চালক জনৈক ব্যক্তিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। টহল পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং পরে সেখান থেকে ঢাকায় নিউরো সায়েন্স এ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত ব্যক্তির মাথায় ১২৮টি সেলাই পড়েছে। ঢাকার হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরিফ চৌধুরী।
এক পর্যায়ে শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে জলঢাকা শহরের নাহিদ হাসান মিঠুকে গ্রেফতার করা হলে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একঘণ্টা পর বিশাল রায় নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় ঘটনার মূলহোতা রেজওয়ানকে।
এ সময় তাদের সাথে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা ছোরা, চাপাতি এবং চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয় মন্থের ডাঙ্গা এলাকার একটি ড্রেন থেকে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান জানান, রেজওয়ান এর নেতৃত্বে জলঢাকায় একটি ছিনতাই চক্র তৈরি হয়েছে। এই চক্রে এখন পর্যন্ত চারজন রয়েছেন। তারা ভোরে ঢাকা কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে জলঢাকায় পৌঁছালে তাদের ছিনতাইয়ের শিকার হন।
পলাতক অপরজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে আসামীরা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আরিফ চৌধুরীর উপর হামলা চালিয়েছিলো মৃত ভেবে তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু অধিকতর জানতে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনায় আরো কারা জড়িত রয়েছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসামিরা উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ব্যবহার করতেন। এ ব্যাপারে জলঢাকা থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মোস্তানছির বিল্লাহ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল) এ এস এম মোক্তারুজ্জামান, জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।