ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন ভিসা বিধিনিষেধ নীতিমালা গ্রহণ করেছে যার নাম দেয়া হয়েছে 'খাসোগি ব্যান'। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্টনি ব্লিংকেন এটি ঘোষণা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এক বিবৃতিতে বিস্তারিত উল্লেখ করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে নিহত সাংবাদিক জামাল খাসোগির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে 'খাসোগির মৃত্যু বৃথা যাবে না' বলে দেয়া জো বাইডেনের বক্তব্যের কথা স্মরণ করে দিয়ে বিবৃতিতে এ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেনঃ
আজ আমি ইমিগ্রেশন এবং জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২ (এ) (৩) (সি) অনুসারে একটি নতুন ভিসা বিধিনিষেধের নীতি ‘খাশোগি ব্যান’ ঘোষণা করছি। বিদেশী সরকারের পক্ষে কাজ করে এমন যেসব ব্যক্তিদের মনে করা হয় তারা নিজ দেশের বাইরে মারাত্মকভাবে বিরোধীমত দমনে সরাসরি জড়িত (যার মধ্যে দমন-পীড়ন, হয়রানি, নজরদারি বা হুমকি রয়েছে) অথবা যারা সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী বা অন্যান্য ব্যক্তিদের (যাদের কাজের ওপর তারা অসন্তুষ্ট বা এই জাতীয় ব্যক্তির পরিবার বা অন্যান্য ঘনিষ্ঠ সহযোগীর) ক্ষতি সাধন করে তাদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ জারি করতে খাসোগি ব্যান স্টেট ডিপার্টমেন্টকে অনুমতি দেয়।
এই জাতীয় ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এই নীতিমালার অধীনে (উপযুক্ত হবার সাপেক্ষে) ভিসা বিধিনিষেধে পড়তে পারেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, এটা চালু করতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট খাসোগি নিষেধাজ্ঞার জেরে ৭৬ জন সৌদি ব্যক্তির উপর খাসোগি ব্যান অনুযায়ী ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ওই ব্যক্তিরা বিদেশে বিরোধী মতের জন্য হুমকি বলে মনে করা হয়। খাসোগি হত্যার সাথে জড়িতরা এদের মধ্যে রয়েছেন, তবে তার বাইরের লোকজনও রয়েছেন।
আমাদের সীমান্তের মধ্যে সবার নিরাপত্তার জন্য, বিরোধী মতের লোকদের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত বিদেশী সরকারের পক্ষের কোন ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট যেনো মানবাধিকার চর্চার বিষয়ে বিভিন্ন দেশ নিয়ে করা বার্ষিক প্রতিবেদনে যে কোনো সরকার কর্তৃক এ জাতীয় বাইরের দেশে চালানো কার্যকলাপ নিয়ে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন দাখিল করে তার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে ব্লিংকেন বলেন, শুধু নিজেদের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা চর্চার জন্য মানুষকে দেশে বা দেশের বাইরে লক্ষ্যবস্তু করে এমন যে কোন সরকার সম্পর্কে আলোকপাত করা অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, সৌদি আরবের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অটুট থাকলেও প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এ অংশীদারিত্বে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধের প্রতিফলন থাকবে। সে লক্ষ্যে, আমরা একেবারে স্পষ্ট করে দিয়েছি যে মানবাধিকার কর্মী, বিরোধী মত এবং সাংবাদিকদের উপর সৌদি আরবকে অবশ্যই বাইরের দেশে গিয়ে চালানো হুমকিধামকি এবং আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র এসব বরদাশত করবে না।।