ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে সচিবালয়ে সরকারি ‘গোপন নথি’ সরানোর বিতর্কিত মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহর আদালত এ আদেশ দেন।
৫ হাজার টাকা জামানত ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার বলেন, আদালতে আমরা জামিন চাইলে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্ত দেয় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। আমরা তা মেনে নিলে রোজিনা ইসলামের জামিন দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বলেন, আসামিপক্ষ রোজিনা ইসলামের জামিন চাইলে, আমরা আদালতকে বলি, তিনি যদি পাসপোর্ট জমা দেন, তবে জামিনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। পরে রোজিনার পক্ষের আইনজীবীরা বিষয়টি মেনে নিলে আদালত তার জামিন দেন।
জামিন আদেশের আগে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, গণমাধ্যম গণতন্ত্রের অন্যতম অনুষঙ্গ। গণমাধ্যমের কারণে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দায়িত্বশীল আচরণ করে থাকে। কোর্ট ও গণমাধ্যম একে অপরের বাধা হিসেবে নয়, পরিপূরক হয়ে কাজ করে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে শুনানি শুরু হয়। ১ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে শুনানি চলে। দুপুর ১টা ৫৬ মিনিটের দিকে শুনানি শেষ হয়। তবে আদালত সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আজ রোববার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে গত মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। অপরদিকে রোজিনা ইসলামের পক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করা হয়।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করে জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। স্বাস্থ্য সচিবের পিএস সাইফুল ইসলামের রুমে ফাইল থেকে গোপন নথি সরানোর অভিযোগে তাকে আটকে রাখা হয়। তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তারা রোজিনাকে আটকে রাখার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি।
রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাংবাদিকরা সচিবালয়ের বাইরে একত্রিত হয়ে রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার প্রতিবাদ করেন।
রাত সাড়ে ৮টার পর রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য সচিবের পিএসের রুম থেকে বের করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মধ্যরাতে তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা হয়।