DMCA.com Protection Status
title="৭

নিখোঁজের ৯দিন পর ঢাকা মেডিকেল মর্গে মিললো ঢাবির মেধাবী ছাত্র মাসুদের লাশ!

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  নিখোঁজের ৯ দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান মাসুদের খোঁজ মিলেছে। তবে জীবিত নয়, মৃত। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে স্বজনরা তার লাশ খুঁজে পান।

রবিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় তার লাশের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পুলিশ বলছে,নিজ দায়ের কোপে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন এই যুবক।

তবে প্রকৃত ঘটনা এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। হাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক মুকাভিনয় সংগঠন মাইম এ্যাকশানের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, তার বড় ভাই ও বন্ধুরা মাসুদের লাশ ঢামেক মর্গে শনাক্ত করেছেন। এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করেছি ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করতে।

মাইম অ্যাকশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর লোকমান বলেন, ঈদুল ফিতরের পরদিন (১৫ মে) গ্রামের বাড়ি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে ঢাকা আসেন তিনি। ঢাকায় ফিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও দেন তিনি। সর্বশেষ মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন মাসুদ। এরপর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ। বন্ধুদের ভাষ্যমতে, সেদিন রাত আট-নয়টার দিকে মাসুদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। বন্ধুরা হয়তো বাড়ি চলে গিয়েছেন এমন ধারণা থেকে তার খোঁজ নেননি। তিনদিন পরও মাসুদ বাড়ি ফিরে না আসলে তাকে খোঁজা শুরু করেন বন্ধুরা। এরপর তার পরিবারের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

তিনি জানান, কসবা থানায় জিডি করার পর শাহবাগ থানায় জিডি করতে গেলে সেখান থেকে পুলিশ জানায় এক জিডিতেই তদন্ত কার্যক্রম চালানো যাবে।

কসবা থানার জিডির সূত্র ধরেই মাসুদের পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ। তিনি বলেন, ১৫ মে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহির্বিভাগের সামনে ভ্রাম্যমাণ ডাবের দোকান থেকে দা নিয়ে তা দিয়ে নিজের গলায় কোপ দিয়েছিলেন মাসুদ। কোপ দিয়ে তিনি শহীদ মিনার এলাকার দিকে দৌড় দেন। এসময় তিনি বারবার বলছিলেন, ‘আমাকে মাফ করে দাও, আমাকে মাফ করে দাও। পরে সেখানে দায়িত্বরত শাহবাগ থানার দারোগা আল আমিনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রিকশায় উঠিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তিনি রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়েন এবং বলতে থাকেন, ‘আমি চিকিৎসা করব না, আমাকে মাফ করে দাও।’ পরে অন্য লোকজনের সহযোগিতায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।’

ওসি বলেন, খবর পেয়ে ওই রাতেই তিনি ঢাকা মেডিকেলে যান। মেডিকেলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়, প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থাও করা হয়। কিছুক্ষণ পরে তিনি মারা যান।

ওসি বলেন, ‘সাধারণত পরিচয়হীন লাশ হলে আমরা তা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দিয়ে দিই। কিন্তু ওই যুবকের লাশটি আমরা ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখার ব্যবস্থা করি।’

হাফিজুর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে কসবা থানায় হওয়া জিডিটি গত শনিবার তাদের নজরে আসে বলে জানান শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ। ওসি বলেন, এরপর তিনি কসবা থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই প্রক্রিয়া থেকেই রবিবার হাফিজুর রহমান মাসুদের ভাই হাবিবুর রহমান শাহবাগ থানায় আসেন। তার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে লাশের ছবিটি দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার দিয়ে উঠে বলেন যে এটাই তার ভাই। পরে মর্গে গিয়েও লাশ শনাক্ত করেন তিনি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!