ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে ৩সঙ্গী ও গাড়ী সহ নিখোঁজের ৭দিন পর ইসলামীক বক্তা ত্বহা আদনানের খোঁজ পাওয়া গেলো।
আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ব্যক্তিগত কারণে গাইবান্ধায় তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানান রংপুর মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন । শুক্রবার (১৮ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
তবে পুলিশের এই তথ্য জনসাধারনের কাছে মোটেও বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। কারন গত ৭দিনে আদনান এবং তার সঙ্গীদের সন্ধানের দাবীতে দেশব্যাপী বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতো ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে সরকারের টনক নড়ে। সবশেষ আদনানের মোবাইল ফোনের অবস্থান ঢাকা সেনানীবাসের ডিজিএফআই সদরে দেখা গেলে এই গাইবান্ধা নাটক মঞ্চায়ন জরুরী হয়ে উঠে বলে অনেকে মনে করেন।
গতকাল বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রংপুর ডিবি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। তার আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবু ত্বহাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
রংপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানিয়েছেন,ব্যক্তিগত কারণেই আদনান গাইবান্ধার ত্রিমোহনীতে সিয়াম নামের এক বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
এ সময় তার তিন সঙ্গীও ছিলেন। ১০ জুন রাতে গাবতলী থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে তারা গাইবান্ধায় আসেন এবং এতদিন তারা সেখানেই ছিলেন।
আবু মারুফ হোসেন বলেন, শুক্রবার (১৮ জুন) দুপুর ২ টার দিকে খবর পেয়ে আমরা তার শ্বশুরবাড়ি মাস্টারপাড়া থেকে তাকে উদ্ধার করি এবং তার দুইসঙ্গী আমিরউদ্দিন ও মুহিত আমাদের হেফাজতে আছে ও আরেক সঙ্গী ফিরোজ আলমকে বগুড়া থেকে আনার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা সবাইকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে উপস্থাপন করব। পরে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার বিকেলে সন্ধান পাওয়া যায় এই আলোচিত বক্তার। পরে তাকে রংপুর নগরের আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবু ত্ব-হাকে তার শ্বশুর আজহারুল ইসলাম মন্ডলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন তার প্রতিবেশী বিপ্লব মিয়া।
এদিকে, গত ১০ জুন দিবাগত রাত থেকে কোনো খোঁজ মিলছিল না আবু ত্বহা, তার দুই সঙ্গী আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনের। সেদিন বিকেল ৪টার দিকে ওই তিনজনসহ আবু ত্ব-হা রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকার পথে রওনা দেন। রাতে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হলে তিনি সাভারে যাচ্ছেন বলে তার মাকে জানান।
এরপর রাত ২টা ৩৬ মিনিটে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় আদনানের। তিনি সাভার যাচ্ছেন বলেই জানান স্ত্রীকেও। তারপর থেকেই তার ফোন বন্ধ থাকায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পরে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি শেষে তাকে না পেয়ে ১১ জুন বিকেলে রংপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন ত্ব-হার মা আজেদা বেগম।
এদিকে ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও তার দুই সঙ্গীকে রাতেই আদালতে নিয়েছে পুলিশ। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন শুক্রবার রাতে যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তাদের তিনজনকে আদালতে তোল হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।