ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান সম্পর্কে অশালীন এবং অযাচিত মন্তব্য করায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে প্রাকাশ্যে শাসিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কায়সার।
শনিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘শিক্ষায় প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি: করোনাকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২১-২০২২’ শীর্ষক আলোচনা সভায় জাফরুল্লাহ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের উদ্যোগে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ. ন. ম. এহছানুল হক মিলন, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অধ্যাপক এম. আব্দুল আজিজ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি ইলিয়াছ খান, কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।
বিএনপি ও এর নেতৃত্ব প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আজ বিএনপি পরিচালিত হচ্ছে আল্লাহর ওহি দিয়ে। ওহি লন্ডন থেকেই বেশি আসে। এ স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটাতে হলে, সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটাতে হবে বিএনপির নিজের ঘরে। সরকার যেভাবে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, বিএনপি হয়তো উপলব্ধি করতে পারছে না।
তারেক রহমানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, তারেক তুমি দুই বছর চুপচাপ বসে থাকো। পারলে বিলেতে লেখাপড়ায় যুক্ত হয়ে যাও, সেখানে বহুভাবে লেখাপড়া হয়।’
বিএনপি ও এর নেতৃত্ব প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘তারা (সরকার) যেভাবে তাকে (খালেদা জিয়া) জীবিত থাকতে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে শুরু করেছে, সেটা হয়তো বিএনপির লোকেরা উপলব্ধি করে না। তাই তারা যদি তাঁর মুক্তি চায় তবে তারেক দুই বছর চুপচাপ বসে থাকো। বিলেতে লেখাপড়ায় যুক্ত হয়ে যাও।’
জাফরুল্লাহর বক্তব্য চলাকালে সভাস্থলে নেতাকর্মীসহ হাজির হন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কায়সার। তিনি জাফরউল্লাহকে উদ্দেশ করে প্রথমে সালাম দেন। তারপর উচ্চস্বরে বলতে শুরু করেন, ‘আমাদের নেতা (তারেক রহমান) সম্পর্কে আপনি বলছেন কেন?’
জবাবে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘না না আপনার নেতা সম্পর্কে বলছি না। কথা শুনে তবেই বলেন। আপনাদের ভালোর জন্যই বলছি। আপনারা নিজেদের ভালো বোঝেন না।’
তখন ওমর ফারুক কায়সার বলেন, ‘সব বুঝি। আমরা অবশ্যই বুঝি। আমাদের নেতাকে ছোট করছেন।’
জবাবে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘শোনেন, আপনার নেতাকে বড় করছি।’
কিন্তু না থেমে ওমর ফারুক কায়সার উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, ‘এর জন্য কোনও কিছু ঘটলে তার দায়ভার আমাদের না, আমরা কিছুই কিন্তু জানি না।’
তখন জাফরুল্লাহ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘এসবের জন্য আপনাদের দায়ী হতে হবে কেন?’
ওমর ফারুক কায়সার বলেন, ‘আপনি জয়কে নিয়ে বলুন, শেখ হাসিনাকে নিয়ে বলুন।’
এরপর ছাত্রদল নেতা সভাস্থল ত্যাগ করলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী পুনরায় তার বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্যের শেষাংশে তিনি বলেন, ‘যেখানে মানুষ ধর্মান্ধ হয়ে যায়, সেখানেই সমস্যা হয়। এই হলো তার প্রমাণ….। আমার মতো লোকদের ভয় দেখিয়ে কণ্ঠরোধ করা যায় না। আমার কাছে যেটা ভালো সেটা বলেই যাবো, তাতে কারো পছন্দ হোক বা না হোক।’
এদিকে ছাত্রদলের ওই নেতার বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করেও তাকে আর ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি বলে উপস্থিত নেতারা তথ্য নিশ্চিত করেন।