ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দিয়েছে ছাত্রলীগ। এ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তার কক্ষের দরজায় ও দেওয়ালে পোস্টারও সাঁটানো হয়।
সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি শেষে বুধবার দুপুর দেড়টায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দেয়।এ সময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারাও তালা মারা কক্ষে আবার তালা দেয়।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার আসিফ নজরুল নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি বলেন ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে’।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আসিফ নজরুলের তালাবদ্ধ কক্ষে আরও তিনটি তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ার খান জয় শহীদ মিনারের সমাবেশে বলেন, আমরা আপনাকে আবারও বলছি, আপনার যদি পাকিস্তানে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, পাসপোর্ট করে পাকিস্তান চলে যান। বাংলাদেশে থেকে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করার সুযোগ অন্তত ছাত্রলীগ দেবে না।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন,এই আসিফ নজরুল বিভিন্ন সময় জামাত-শিবির ও জঙ্গিবাদীদের উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে থাকেন।
তিনি বলেন, রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাড়িয়ে উনি বলেছেন- শিবির হলে কী হয়েছে? শিবির হলে কি তাকে মারতে হবে? আমরা তাকে বলে দিতে চাই, শিবির হলেই তাকে মারতে হবে।
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আরেক সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, তালেবানের সমর্থনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আসিফ নজরুল প্রমাণ করেছেন, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
এ বিষয়ে আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে বলেন, আমি বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে। এটার মধ্যে কী দোষের আছে, আমি বুঝতে পারছি না। আমি খুবই হতবাক।
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় ছাত্রলীগের মামলাঃ
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ছাত্রলীগ।
বুধবার রাত ৮টার দিকে ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান শাহিন বাদী হয়ে এ অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এটি এখন জিডি আকারে দায়ের করা হবে। পরে বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে পাঠানো হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী এটা মামলা হিসেবে রুজু হতে পারে।