ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির প্রতিস্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সাম্প্রতিক ব্যাপক আলোচনার মধ্যে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার বললেন, মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার পদে থাকলেও জিয়া কখনও পাকিস্তানিদের লক্ষ্য করে একটি গুলিও ছোড়েনি।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “জিয়াউর রহমান… হ্যাঁ মুক্তিযুদ্ধে সে একটা সেক্টর কমান্ডার ছিলো অর্থাৎ সেখানে খালেদ মোশাররফ আহত হয়ে গেলে, জিয়াকে সেক্টর কমান্ডার করা হয়েছিল।
“কিন্তু সে কখনও. বিশেষ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কখনও গুলি চালিয়েছে এই রকম কিন্তু কোনো নজির নাই। এই রকম কোনো নজির কেউ দেখাতে পারবে না।”
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বরাবরই বলে আসছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া ঘটনাচক্রে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বরাবরই পাকিস্তানিদের প্রতি আনুগত্যশীল ছিলেন।
পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমাকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় তখনকারী সেনা উপপ্রধান জিয়াকেও দায়ী করেন শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবারের আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “পঁচাত্তরেরর পরে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, সেখানে যেমন আমাদের দলেরও কিছু বেইমান, মুনাফেক, মীর জাফর ছিল, যেটা খন্দকার মুশতাক গং। আর তার শক্তিটা ছিল জিয়াউর রহমান।
“মুশতাক বা রশীদ, ফারুক তারা বিবিসিতে যে ইন্টারভিউ দিয়েছে ১৫ই অগাস্টের পর, সেই ইন্টারভিউতেই তারা স্বীকার করেছে। শুধু তাই না। অনেক পত্রিকায়ও তাদের বক্তব্য এসেছে যে জিয়াউর রহমান এই খুনিদের সাথে সব সময় ছিল।”
শেখ হাসিনা বলেন, “অথচ জিয়া ছিল একটা মেজর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বদৌলতেই কিন্তু জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হয়েছিল। পাকিস্তান নামের দেশটা থাকলে ওই মেজর হিসেবেই তার রিটায়ার করতে হত।
“কিন্তু বেইমানি, মুনাফেকি তারা করেছিল। তখন যে ভূমিকা নেওয়ার কথা ছিল, কেউ নেয়নি। জাতির পিতার লাশ, সকলের লাশ ১৬ তারিখ পর্যন্ত ওই ৩২ নম্বর বাড়িতেই ছিল। কাফন দাফনের ব্যবস্থাটুকু অন্তত করা হয়নি।”
জিয়া রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার শাসনামলে সারাদেশে সেনাবাহিনীর শত শত কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের বহু নেতাকর্মীকে হত্যার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
“মেধাবী ছাত্র, তাদের হাতে একদিকে যেমন মেধার জন্য পুরস্কার তুলে দিয়েছে, অপরদিকে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, অর্থ তুলে দিয়েছে, মাদক তুলে দিয়েছে এবং তাদেরকে ব্যবহার করেছে। তাদেরকে বিপথে নিয়েছে।”
জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার এক বক্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “সে হুমকি দিয়েছিল যে আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করতে তার ছাত্রদলই নাকি যথেষ্ট। তার কারন ছাত্রদলের হাতে তারা অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তারা লেখাপড়া শিখতে উৎসাহিত করে নাই।
“তারা তো ছাত্র সমাজকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হোক এই জাতি, এটা তারা কখনও চায়নি। অবশ্য চাইবেই বা কেমন করে? নিজেদের কী অবস্থা, সেটাও তো দেখতে হবে।”
বিপরীতে আওয়ামী লীগ শিক্ষার্থীদের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আদর্শবান হওয়ার উপর গুরুত্ব দেন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারীর এই দুঃসময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় তিনি তাদের ধন্যবাদও জানান।