ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দেশের সুর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়া যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
মহান ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ মুক্তিযুদ্ধের জেড ফোর্সে অধিনায়ক সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের কটূক্তির জবাব দিতে গিয়ে শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শুধু জিয়াউর রহমান কেন, যারাই যুদ্ধ করেছেন তাদের সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়া যুদ্ধাপরাধের শামিল।
আবার যুদ্ধাপরাধের ট্রাইব্যুনাল চলবে। আমরা চালাব, আমরা চালাব। যুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে- এরা তো স্বাধীনতাই বিশ্বাস করে না, এরা যুদ্ধে বিশ্বাস করে না। ওরা তো আলবদরের চেয়েও ক্ষতিকারক। আলবদর তো মাটির নিচে গেছে। রাজাকাররাও কয়েকদিন পর আর থাকবে না।
গয়েশ্বর বলেন, মুক্তিযুদ্ধ যারা দেখেছেন তাদেরকেও ৩০ বছর পর খুঁজে পাওয়া যাবে না। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা নিজ কানে শুনছেন এই লোকগুলো ৩০ বছর পর পৃথিবীতে থাকবে না। কিন্তু জাতি লালন করবে সত্য ইতিহাসগুলো। সেই লালনের ক্ষেত্রটা তৈরি করা আপনার-আমার দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের এখন দায়িত্ব আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবেশ তৈরি করা। আমরা পল্টনের নায়ক না বানিয়ে, পরিস্থিতি-পরিবেশ তৈরি করে তাকে দেশে এনে রাষ্ট্রের নায়ক আমরা বানাই। এটা শুধু মুখে বললে তো হবে না। মুখে বলার সঙ্গে সেটা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
গয়েশ্বর বলেন, ১/১১ নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। কারণ ১/১১ এর সঙ্গে যারা জড়িত প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ তারাই এখন আমার দলের নেতৃত্ব দেন। সেখানে বইলা আমি দলে বিভাজন ফালাই কেমনে। আমি এটা চাই না।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ওরা (আওয়ামী লীগ) যুক্তি বুঝে না, কিচ্ছুই বুঝে না। ওরা একটাই বুঝে, ওরা মনে করে আলোচনায়, ওরা মনে করে ভাষণ দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ওরা মনে করে যে, আদালতের রায়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা ছোটবেলায় শুনতাম আইয়ুবের শাসন, শেখ মুজিবের ভাষণ, আর এখন শেখ হাসিনার দুঃশাসন- এই তিনটা বিষয়। আমি বলতে চাই, আদালতের রায়ে দেশ স্বাধীন হয় নাই, ভাষণে দেশ স্বাধীন হয় নাই, আলোচনায় দেশ স্বাধীন হয় নাই। যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত রহমানের তারেক রহমানের ১৪তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১/১১-এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্দেশে যৌথ বাহিনী ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে।
নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উপদেষ্টা বিলকিছ ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ফরিদা ইয়াসমীন, মহানগর দক্ষিণের ফরিদ উদ্দিন, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কৃষক দলের জনতার রফিক, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়, মুসা ফরাজী প্রমুখ বক্তব্য দেন।