ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চাকর-বাকর উল্লেখ করায় চাকর-বাকরদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী৷ তিনি বলেন, আমি চাকর-বাকরদের কাছে ক্ষমা চাইছি। বিএনপির নেতাকর্মীদের চাকর-বাকরের গুণাবলিও নেই।
আজ শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷
ছাত্র অধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি সভা উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয় জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন যাবৎ এই ডাঃজাফরুল্লাহ বিভিন্ন সময়ে বিএনপি এবং এই দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন মন্তব্য করে আসছেন।বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার এই বয়োজোষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে অনুরোধ করার পরও তিনি তা বন্ধ করেননি। এমনকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে প্রেসক্লাবের একটি সেমিনারে তিনি অপমানজনক মন্তব্য করলে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতা-কর্মীগন তীব্র প্রতিবাদ করেন।এতো কিছুর পরও বিএনপিকে নিয়ে ডাঃ জাফরুল্লাহ অতি উৎসাহ কমেনি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফখরুল সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ বলেছিলেন, বেচারা বাড়ির চাকর-বাকরের মতো আছে। সেই বক্তব্যের জের ধরে শুক্রবার জাফরুল্লাহ বলেন, আমার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে আমার রাজনৈতিক স্নেহাস্পদ ব্যক্তিরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন। তাদের আমি চাকর-বাকরের সঙ্গে তুলনা করেছি। আমি চাকর-বাকরের কাছে ক্ষমা চাইছি। এই দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের চাকর-বাকরের গুণাবলিও নেই।
তিনি বলেন, তাদের না কবজিতে জোর আছে, না মাথা ঘোরানোর অধিকার আছে। বাড়িতে চাকর-বাকরকে যেভাবে ইচ্ছা অত্যাচার করেন, একসময় ঘাড় ত্যাড়া করে বলে যে, থাকুক আপনার চাকরি, বাড়ি চইলা গেলাম। এই রাজনৈতিক কর্মীদের একজনেরও তা নেই। চাকর-বাকর ভাইয়েরা, আপনাদের আমি ছোট করেছি, আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার সমালোচনা করেন ডা. জাফরুল্লাহ।
ফখরুলের সেই সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়ে তিনি বলেন, আমি তারেক রহমানের জায়গায় জাইমা রহমানকে ক্ষমতা দিতে বলিনি। বলেছি, তাকে (জাইমা) রাজনীতি শিখতে দিন, রাজপথে আসতে বলেন। রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিতে হলে রাজপথে হাঁটতে হয়। অনেকে আমার কথায় কষ্ট পেয়েছেন বলে দুঃখিত। আমার বয়স হয়েছে, এটা একদম সঠিক। কিন্তু কথায় কথায় আমাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় না। কারণ আমার সততা ও সাহস। আমি জনগণের পক্ষের লোক, আমার অন্য কেউ নেই।
সভায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নতুন নেতৃত্বকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার এখন আতঙ্কিত বোধ করছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা মরণ কামড় দেবে। আমরা জীবিত থাকতে ২০১৪ এবং ১৮ সালের মতো বিনাভোটের নির্বাচন হতে দেবো না। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা শিগগিরিই রাজপথে নামব। একটি গণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে হবে বলেও জানান তিনি।