ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটলেই এই অবৈধ সরকারের মন্ত্রীরা বিএনপিকে জড়ানোর চেষ্টা করেন অথচ কাজগুলো তারা নিজেরাই করে থাকেন বলে মন্তব্য করেছেন ফখরুল।
তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
আজ রবিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে সরকারের মদদ রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণবিরোধীনীতির কারণে সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় দেশে নৈরাজ্য ভয়ালরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশের মানুষ এখন জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ঠিক এই মুহূর্তে সরকার নানা বায়োস্কোপ প্রদর্শন করে তাদের অমানবিকতার বলি করছে দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বুধবার সকালে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনায় উৎকণ্ঠা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দেশের বিভিন্ন স্থানে হতাহতের ঘটনাসহ দেশব্যাপী রক্তাক্ত সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। কুমিল্লা পূজামণ্ডপের ঘটনার জের ধরে ওই দিন রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সহিংস সংঘাতে চারজন নিহত হয়। প্রতক্ষ্যদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী হাজীগঞ্জে পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগ, যুবলীগও বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ ছাড়া দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগে মির্জা ফখরুল বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরঞ্জিত আচরণ ও শক্তি প্রয়োগের কারণে জীবনহানি ও গুরুতর আহতসহ দেশের বিভিন্ন জনপদ রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে। কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলাধীন বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুরসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় যতন সাহা নামে এক ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন একটি প্রশ্ন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, কে বা কারা পবিত্র কোরআন শরিফ পূজামণ্ডপে নিয়ে গেছে? সরকারের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসের পর শুধু ক্ষমতা-সংশ্লিষ্ট দুষ্টচক্র ছাড়া দেশের জনগোষ্ঠীর কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ই এই কদর্য কাজ করবে না বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমি এই ঘটনা জানার পরপরই একটি বিবৃতিতে বলেছিলাম, সরকারের মদদেই কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে চক্রান্তমূলক কুৎসিত কাজটি করা হয়েছে। এর বড় প্রমাণ ঘটনার পরপরই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা অতিসত্বর পূজামণ্ডপ ও মন্দিরগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এই অনুরোধে সাড়া না দিয়ে পুলিশ পাঠিয়েছে অনেক পরে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের নীতি আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।