ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গুলশানে নিজ বাসা ফিরোজায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
আজ রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানের সঙ্গে বাসায় ফেরেন তিনি। বাড়িতে পৌঁছানোর পর তাকে হাত ধরে গাড়ি থেকে নামান পুত্রবধূ।
বাসায় তাকে অভ্যর্থনা জানাতে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শিরিন সুলতানা ও আফরোজা আব্বাসসহ নেতারা।
বিএনপির কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করায় তাকে এখন থেকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।
এর আগে ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৫ অক্টোবর তার অস্ত্রোপচার করা হয়।
ওই দিন গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার একটি মাইনর অপারেশন করা হয়েছে। এখন তিনি আইসিইউতে আছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৩ দিন চিকিৎসা শেষে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর পর থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় ছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এপ্রিলে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নানা শারীরিক জটিলতায় ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একপর্যায়ে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। প্রায় দুই মাস তিনি সিসিইউতে ছিলেন। ১৯ জুন বাসায় ফেরেন। এর মধ্যে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়া দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান। ১৯ জুলাই করোনার প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন তিনি।
কথিত দুর্নীতির মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়।