ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক সপ্তাহের মাথায় আবারো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। পরে রাতে জানানো হয়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবীর খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। তাই তাকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালের কেবিনে থাকবেন।’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ম্যাডামের কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। এজন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
সম্প্রতি কয়েক দফায় বিএনপি প্রধানকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২৬ দিন একই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত ৭ নভেম্বর বাসায় ফিরেন তিনি। গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে ২৫ অক্টোবর তার ছোট একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তার বায়োপসি পরীক্ষা করা হয়।
এর আগে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৩ দিন চিকিৎসা শেষে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর পর থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় ছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এপ্রিলে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নানা শারীরিক জটিলতায় ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
একপর্যায়ে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। প্রায় দুই মাস তিনি সিসিইউতে ছিলেন। ১৯ জুন বাসায় ফেরেন। এর মধ্যে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়া দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান। ১৯ জুলাই করোনার প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন তিনি।
কথিত দুর্নীতির মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়।