ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ছোট ছেলে স্বাধীন আহমেদ মদ্যপ অবস্থায় দুই বন্ধু এবং দুই মেয়েবন্ধু সহ বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন তার দুই বন্ধু।
আজ মঙ্গলবার ভোররাত ৩টার দিকে জেনারেল আজিজের ছোট ছেলে স্বাধীন আহমেদ নিজের মিতসুবিসি আউটল্যান্ডার গাড়ি নিয়ে দু ঘনিষ্ট বন্ধু আইমান ও ফাহমিদ সাথে আরও দুই মেয়ে বন্ধু সহ মাতাল অবস্থায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ রাওয়া ক্লাবের সম্মুখে মহাখালী ফ্লাইওভারেরর সঙ্গে ভয়াবহ সড়ক দূর্ঘটনা ঘটায়।
২ জন ঘটনাস্থলেই নিহত, অপর তিনজন গুরুতর আহত হয়। নিহতদের একজন সেনাবাহিনীর লে.কর্নেল (অবঃ) ফারুকের ছেলে আইমান। দুর্ঘটনায় জেনারেল আজিজের ছোট ছেলে স্বাধীন গুরুতর আহত হয়, তাকে বর্তমানে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসিইউ’তে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গাড়ীতে থাকা দুই মেয়ে বন্ধুর বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। পুলিশ জানায়, রাত ৩টার দিকে মিতসুবিসি আউটল্যান্ডার মডেলের একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মহাখালী ফ্লাইওভারের পিলারে ধাক্কা খায়। এতে গাড়িটির সামনের সিটে থাকা দুই তরুণের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার আগে গাড়ির চালককে পেছনে পাঠিয়ে ওই দুই তরুণ সামনের সিটে বসে একজন গাড়ি চালাচ্ছিল। এদের মধ্যে একজনের নাম ওমর আইমান; অপরজন ফাহমিদ আহমেদ রায়হান। প্রাণে বেঁচে যাওয়া গাড়ির প্রকৃত চালক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রাজধানীর মহাখালীতে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় গাড়িতে থাকা দুই তরুণীসহ তিনজনকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই গাড়িতে দুই তরুণীসহ মোট সাতজন ছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন ঘটনার পর পালিয়ে যান। তাদের পাওয়া গেলে দুর্ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে মহাখালীর রাওয়া ক্লাব সংলগ্ন ফ্লাইওভারের একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ফাহিম আহমেদ রায়হান ও উমর আয়মান নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। আয়মানের বাবা কর্নেল (অব.) ফারুক আহমেদ। ফাহিমের বাবার নাম ইলিয়াস আহমেদ।
দুর্ঘটনায় আহত বাকি দুজন হলেন- স্বাধীন আহমেদ ও গাড়িটির চালক মো. মহসিন।এই স্বাধীন সাবেক সেনাপ্রধানের ছোট ছেলে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন।
কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বলেন, ভোর রাতে ওই প্রাইভেটকারের আরোহীরা কোথাও যাচ্ছিলেন। মহাখালী রাওয়া ক্লাবের সামনে ফ্লাইওভারের একটি পিলারের সঙ্গে গাড়িটি ধাক্কা খায়। এতে কালো রঙের গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হন। প্রাইভেটকার চালক মহসিনকে পেছনে বসিয়ে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রায়হান। নিহত দুজনের একজন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপর একটি সূত্র জানায়, গাড়িতে পাঁচজন ছেলে ও দুজন মেয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে দুই মেয়ে ও এক ছেলের পরিচয় জানা যায়নি। দুর্ঘটনার পর তারা গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায়।
দুর্ঘটনাটির তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই আলমগীর মঙ্গলবার রাত সাতটার দিকে বলেন, এই ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
নিখোঁজ তিনজনের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই আলমগীর বলেন, ‘গাড়ির চালক মহসিনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কিন্তু পলাতকদের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি সে।’
কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘নিহতদের মরদেহ পরিবার বুঝে নিয়েছে। আমরা গাড়িতে থাকা দুই তরুণীসহ তিনজনকে খুঁজছি। হয়তো তারা আহত হয়ে কোথাও চিকিৎসা নিচ্ছেন। অতিরিক্ত গতি ,মদ্যপ অবস্থা এবং অদক্ষ চালনার কারণে ভোর রাতের ফাকা রাস্তায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’