ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি নেতারা তাদের দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে সকাল-বিকাল অযৌক্তিক দাবি তুলে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসা দেশের আইনের মধ্যে পড়ে না। দণ্ড স্থগিত অবস্থায় কেউ দেশের বাইরে যেতে পারে না। একমাত্র দণ্ড মওকুফ হলে তিনি বিদেশে যেতে পারেন। আর দোষ স্বীকার করে রাষ্টপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ আছে। রাষ্ট্রের অভিভাবক আমাদের রাষ্ট্রপতি দয়ালু মানুষ। তিনি চাইলে ক্ষমা করেও দিতে পারেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গণমাধ্যম: ভূমিকা ও সংকট’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মতো সাংবাদিকদের অনেকেও অন্যায় এ দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন মন্তব্য করে হানিফ বলেন, ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা হলো। রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হাওয়া ভবনে বসে হামলার পরিকল্পনা হয়েছে। পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। বেগম খালেদা জিয়া সংসদে এ নিয়ে নিষ্ঠুর রসিকতাও করেছেন। কোনো সাংবাদিক বেগম খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করেনি। কোনো প্রশ্ন করলে হয়তো সেই সাংবাদিককে জেলে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেকে অযৌক্তিক প্রশ্ন করেন। দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর টকশোর আলোচকরা কোনো ধরনের সেন্সর ছাড়া সরকারের কর্মকাণ্ডের যথেচ্ছা সমালোচনা করেন। এ ধরনের স্বাধীন মতপ্রকাশে সরকার কখনো হস্তক্ষেপ করে না, কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করে না। দেশের গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীন এবং স্বাধীনতা ভোগ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশে এখন যেকোনো নিউজ ছাপানো যায়। ভুল কিছু ছাপালে কেবল দুঃখপ্রকাশ করলে রেহাই পাওয়া যায়। বিদেশে ভুল সংবাদ করলে ডিক্লারেশন বাতিল হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এর নজির নেই।
আইসিটি আইন বিষয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বাধা হিসেবে ডিজিটাল আইনের কথা বলা হয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। আইনের দোষ কোথায়? প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের নামে আইসিটি আইনে মামলা হয়েছিলো। উনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ সাংবাদিক কিন্তু উনার নামে কেন মামলা হয়েছিলো? ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে বিদেশি মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়েছেন। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব বলেছেন। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করলেন, ছাত্রসমাজের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করলেন। দেশে অরাজকতা তৈরি করলেন। এখানে মামলা হওয়া কি আইনের ব্যত্যয় হয়েছে?
অনুষ্ঠানে কী-নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। জাগরণ আইপি টিভি’র প্রধান সম্পাদক এফএম শাহীনের সঞ্চালনা ও বিবার্তা২৪ডটনেট সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি’র সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, ডিবিসি নিউজ সম্পাদক প্রণব সাহা, বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, নিউজ টোয়েন্টিফোর এর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক এবং ডব্লিউজেএনবির সমন্বয়ক আঙ্গুর নাহার মন্টি প্রমুখ।