DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

বেগম খালেদা জিয়ার ফের রক্তক্ষরণঃ অতি দ্রুত বিদেশে পাঠান: মির্জা ফখরুল

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা আবারও ‘সংকটাপন্ন’ বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

 

তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে গিয়েছিলাম হাসপাতালে। সব চিকিৎসকই সেখানে ছিলেন। তিনি (খালেদা জিয়া) আবার সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছেন। আবার তার রক্তক্ষরণ হয়েছে। চিকিৎসকরা পরিষ্কার করে বলেছেন, জীবন রক্ষা করার জন্য এক মুহূর্ত দেরি না করে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। সরকারের কাছে আবারও আহ্বান, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার প্রথম থেকেই খালেদা জিয়ার বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থানে থেকে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার অনুমতি দিচ্ছেন না। সবাই দেখেছেন, সুস্থ অবস্থায় হেঁটে তিনি কারাগারে গিয়েছিলেন। কয়েক বছর ওই কারাগারে থাকার ফলে চিকিৎসা না হওয়ায় আজকে এমন একটা অবস্থা হয়েছে যে, তিনি ২৬ দিন ধরে আইসিইউতে আছেন। প্রতিটি মুহূর্তে তার স্বাস্থ্যের অবস্থাকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, মনিটরিং করা হচ্ছে।

১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পরপরই রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে দ্রুত সিসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা পরবর্তীতে গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে ভুগছেন।

৪০১ ধারার শর্ত তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনের কথা বলেন। কেন জনগণকে বোকা বানাতে চান? ৪০১ ধারায় শর্ত দিয়েছেন, খালেদা জিয়া দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শব্দটা আপনারাই (সরকার) তুলতে পারবেন, আর তো কেউ তুলতে পারবে না। ওই শর্ত তুলে নিন।

তিনি বলেন, বিদেশে যেতে পাসপোর্টের জন্য যে আবেদন করা হয়েছিল তা বাতিল করে দিয়েছেন। অবিলম্বে তার পাসপোর্ট দিয়ে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি হলে, অঘটন ঘটলে তার সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কেন সরকারের অনীহা প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অনেকবার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি, পরামর্শ নিয়েছি। দেশনেত্রী যখন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন তখন তাকে একইভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বারবার বলার পরে যখন মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে সেই বোর্ডের অধীনেও তার চিকিৎসা হয়নি। পরবর্তীকালে আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা মূলত তার অবস্থা জানতে সেখানে (কারাগারে) যান। তাদের সুপারিশক্রমে পরবর্তীকালে যখন তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন অলরেডি অবস্থা চেঞ্জ হয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অবস্থার কারণ হচ্ছে, সরকার দেশনেত্রীকে তিলে তিলে, ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারণ একটাই দেশনেত্রী একমাত্র রাজনীতিক যিনি এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলেন, যিনি এ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনিই হচ্ছেন একমাত্র রাজনৈতিক নেত্রী, যিনি এদেশের গণতন্ত্রের জন্য তার সমস্ত জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। এজন্যই তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।

শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের শওকত মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, এগ্রিকালরিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের জাকির হোসেন, শেখ আমজাদ আলী, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, আবদুল আউয়াল, আবদুর রহমান, সেকান্দার আলী, কামরুন্নাহার লিজি, রোকেয়া চৌধুরী প্রমুখ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!