ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে নির্বিগ্নে দেশ ছাড়লেন চরম বিতর্কিত ও শিষ্টাচার বহির্ভুত বক্তব্য দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবৈধ সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান।
আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটের দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে৮৫৮৫ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কানাডার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
এদিকে বিতর্কিত এই ডা.মুরাদ হাসানকে কানাডায় প্রতিহতের ঘোষনা দিয়েছেন বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ ডট নেট এর সম্পাদক ও বিএনপি নেতা ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজু সহ কয়েকটি দেশপ্রেমিক প্রবাসী সংগঠন।
জানা যায়, গত চার দিন ধরে লোকচক্ষুর অগোচরে থাকা মুরাদকে এদিন রাত ৯টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ রজনীগন্ধায় দেখা যায়।
প্রথমে রাত ১১টা ২০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার দেশত্যাগের কথা থাকলেও সেটি বিলম্ব হয়। এমিরেটসের ফ্লাইটটি কিছুটা দেরি করে রাত ১টার পর শাহজালাল বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
বিমানবন্দরে বিতর্কিত এ সংসদ সদস্যকে অনেকটা নির্বিঘ্নেই ফ্লাইটে ওঠতে দেখা যায়। এসময় জিন্স প্যান্ট ও ব্লেজার পরিহিত মুরাদের ডান হাতে ছিল মেরুন রঙের একটি হ্যান্ড লাগেজ, বাম হাতে ধরা ছিল পাসপোর্ট, কাঁধে ছিল একটি চামড়ার ব্যাগ। উপস্থিত সাংবাদিকগন তার ছবি তোলার চেষ্টা করলে তিনি এড়িয়ে যান বলে জানা যায়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন (৭ ডিসেম্বর) নিজের হাতে নিয়ে গেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা হমানকে নিয়ে অত্যন্ত অশ্লীল ও আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার মধ্যেই ডা. মুরাদ হাসানের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের ওই অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। এরপর সোমবারই (৬ ডিসেম্বর) মুরাদকে পদত্যাগের অনুরোধ করেন মিডনইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরদিন মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারন উল্লেখ করে পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ। ওইদিন বিকালেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেট বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের কারণে মুরাদ সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর কিছু অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে প্রবল নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।