DMCA.com Protection Status
title="৭

অবশেষে চরম ব্যর্থতা নিয়ে বিদায় নিচ্ছে নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশন

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রচুর বিতর্ক,চরম ব্যর্থতা ও নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ন ধ্বংস করার অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদায় নিচ্ছে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

স্থানীয় সরকারের গোনা কয়েকটি নির্বাচন বাদে গত পাঁচ বছরের প্রায় সব নির্বাচন এবং এতে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন ছিল। কমিশনের ভেতর থেকেও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একাধিকবার।

এই কমিশনের বিরুদ্ধে জাতীয় নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে তা তদন্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে দুই দফা চিঠি দিয়েছিলেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।

২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেয় কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন। এই কমিশনের সদস্যরা হলেন মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। গঠনের পর থেকেই এই কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক ছিল। শুরুতে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। তাঁর কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা এবং কুমিল্লার জেলা প্রশাসক থাকাকালে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ‘জনতার মঞ্চের’ সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে এনে বিএনপিসহ বিরোধীরা বলেছিল, নূরুল হুদার নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ। গত পাঁচ বছরে সিইসি এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিশনকে বিতর্ক আর পিছু ছাড়েনি। নানা অভিযোগ সঙ্গে নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিদায় নিচ্ছে এই কমিশন।

এই কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১৭ সালের মার্চে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন করে প্রশংসিত হয়েছিল হুদা কমিশন। এরপর ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনও ভালো হয়েছিল। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনও ছিল সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত। এর বাইরে বিভিন্ন সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও চলমান ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ইসির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

মূলত জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ১৫ মে গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠতে শুরু করে। জাতীয় নির্বাচনের আগে খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মী, ভোটার এবং গণমাধ্যমকর্মীদের নানাভাবে চাপে রেখে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করার প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া, সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে বুথ দখল করে ব্যালটে সিল মারা, পুলিশের বাড়াবাড়ি বা পক্ষপাতমূলক ভূমিকা নিয়ে বিরোধী পক্ষগুলোর নানা অভিযোগ ছিল। কিন্তু ইসিকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

 

সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। নূরুল হুদা কমিশনের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে মাঠে সবার জন্য সমান সুযোগ ছিল না। প্রচারে বাধা, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পোলিং এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বা মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ভোটের আগের রাতে মহাজোট প্রার্থীদের প্রতীকে ভোট দিয়ে বাক্স ভরে রাখা, কোনো কোনো কেন্দ্রে বেলা ১১টার মধ্যেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া, কোথাও ভোটারদের প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করা, দীর্ঘ সময় লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ না করা, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ ছিল। কিন্তু ইসি ভোটের আগে ও পরে কোনো অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেয়নি। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং নাগরিক সমাজ বলে আসছে, এই কমিশন দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি পত্রপত্রিকায় দেখেন, অনেকে এ ধরনের মন্তব্য করেন। কিন্তু তাঁরা কোথাও বলেন না ইসি কী ধ্বংস করেছে, কীভাবে ধ্বংস করেছে। বিষয়টি তাঁর কাছে পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, সংসদে বিতর্ক শুনলে দেখা যাবে, একটা অংশ বলছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আরেকটা অংশ বলছে, না, সব ঠিক আছে। যে অংশ ধ্বংসের কথা বলছে, সেটা সংসদের প্রেক্ষাপটে ক্ষুদ্র অংশ।

তাহলে কি ইসি সরকারি দলের পক্ষ নিয়ে কাজ করেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি দল বলে, আমাদের কাছে কিছু নাই। আমাদের কাছে আছে প্রার্থী, ভোটার এর বাইরে আর কিছু দেখার অবকাশ নেই।’

জাতীয় নির্বাচনে অস্বাভাবিক ফল

স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর মতো জাতীয় নির্বাচনেও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইসি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ক্ষমতাসীনেরা ব্যালট বাক্স ভর্তি করে বলে অভিযোগ তোলে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো। পরে ভোটের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলেও অনেক অসংগতি দেখা যায়।

ভোটের পর সাধারণত কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফল প্রকাশ করা হয় প্রায় ছয় মাস পর। তাতে দেখা যায়, ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ে। ১ হাজার ২০৫টি কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৯৬ থেকে ৯৯ শতাংশ। ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে ৬ হাজার​ ৪৮৪টি কেন্দ্রে। আর ৮০ থেকে ৮৯ শতাংশ ভোট পড়েছে, এমন কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫ হাজার ৭১৯। অন্যদিকে ১১টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১০ শতাংশের কম। ২০টি কেন্দ্রে ১০ থেকে ১৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর ২০ থেকে​ ৩৯ শতাংশ ভোট পড়েছে ৩০১টি ভোটকেন্দ্রে।

ভোটের দিন বিবিসি বাংলার এক খবরে বলা হয়, চট্টগ্রাম-১০ আসনের শহীদনগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রে গিয়ে সকালে ভোট গ্রহণের আগে ব্যালট বাক্স ভরা দেখেছেন বিবিসির সংবাদদাতা। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের ৫০টি আসনের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর এক পরিবীক্ষণের ফলাফলে ৪৭টিতেই অনিয়মের প্রমাণ পায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এর মধ্যে ৩৩টি আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়। ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি টিআইবি তাদের এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল।

রাজনীতির সঙ্গে সেভাবে সম্পৃক্ততা না থাকলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন সিইসির ভাগনে এস এম শাহজাদা।

শতভাগ ভোট পড়া অস্বাভাবিক মনে করলেও রাতের ভোট ‘অভিযোগ আকারেই থেকে গেছে’ বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন সিইসি নূরুল হুদা। দিনের ভোট রাতে হওয়ার অভিযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গত ২৭ জানুয়ারি সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। কারণ, আমি তো দেখি নাই। আপনিও দেখেননি যে রাতে ভোট হয়েছে। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত, বেরিয়ে এলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। সারা দেশের নির্বাচনও বন্ধ হয়ে যেতে পারত। রাজনৈতিক দলগুলো কেন আদালতে অভিযোগ দেয়নি, সেটা তাদের বিষয়। এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছে।’

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিশেষ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মোট ৭৪টি মামলা করেছেন বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলার রায় হয়নি। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের পর ইসি বই আকারে নির্বাচনী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কিন্তু নূরুল হুদা কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনো কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

দিনের ভোট রাতে হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন তাঁরা সারা দিন কোনো অভিযোগ পাননি। আরপিওর ৩৯(৪) অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ভোটের ফলাফল প্রেরণ করলে ইসিকে তা গেজেটে প্রকাশ করতে হয়। ফলাফল প্রকাশের কয়েক দিন পর এই অভিযোগগুলো আসতে থাকে। তবে কেউ প্রমাণসহ অভিযোগ দেয়নি। তিনি বলেন, যেসব ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে, সেগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তা তদন্ত করতে পারতেন। তবে ওই সব আসনে ভোটের ব্যবধান এত বেশি ছিল যে ওই কেন্দ্রগুলোর ভোটে ফলাফলে কোনো ফারাক হতো না।

নগণ্য ভোটার উপস্থিতি ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাঃ

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সংসদের উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটার-স্বল্পতা দেখা দেয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ভোট পড়েছিল ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং দক্ষিণে ২৯ শতাংশ। পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনগুলোতেও ভোটের হার ছিল কম। তবে বেড়ে যায় বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যা। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন ১১১ জন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি এত কম দেখে এটাকে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে মন্তব্য করেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। অবশ্য মেয়াদের শেষ দিকে এসে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বেড়েছে। যদিও বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি হওয়ার প্রবণতা এবং নির্বাচনী সহিংসতা বেড়ে যায়। চলমান ইউপি নির্বাচনের ষষ্ঠ পর্ব পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই ভোটে এখন পর্যন্ত ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। তবে এই সহিংসতার জন্য প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের দায়ী করে সিইসি একাধিকবার বলেছেন, এখানে ইসির কোনো দায় নেই।

অবশ্য সিইসির সহকর্মী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ইউপি ভোটের দ্বিতীয় দফা শেষে গত বছরের ১৪ নভেম্বর বলেছিলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ যতই ফুরিয়ে আসছে, নির্বাচনী ব্যবস্থা ও অবস্থা দেখে তিনি ততই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে।

কমিশনে মতবিরোধঃ

এই কমিশন শপথ নেওয়ার পাঁচ মাসের মাথায় ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ইসি সচিবালয়ের ৩৩ জন কর্মকর্তার বদলি নিয়ে সিইসি নূরুল হুদা ও নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের মধ্যে বিরোধ প্রথম প্রকাশ্যে আসে। এরপর জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন, সিটি নির্বাচনে সাংসদদের প্রচারের সুযোগ দেওয়া, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইসির মতবিরোধ প্রকাশ্যে আসে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও কমিশনে মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল। এসব ক্ষেত্রে মূলত মতবিরোধ দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের সঙ্গে অন্য কমিশনারদের। মেয়াদের শেষে এসেও মাহবুব তালুকদারের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন সিইসি।

সমালোচকদের সমালোচনায় সিইসি

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজের তীব্র সমালোচনার মুখে ছিল ইসি। গত ২৭ জানুয়ারি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এসে সমালোচকদের সমালোচনা করেন সিইসি। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ও সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা ও তাঁর কমিশনের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ইসির দায়িত্ব ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা। শামসুল হুদা নির্বাচন করেছেন ৬৯০ দিন পরে।

এ বিষয়ে শামসুল হুদা কমিশনের সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সিইসি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার আগে নথিপত্র, আদালতের রায় দেখলে পারতেন। তিনি বলতে চেয়েছেন শামসুল হুদার কমিশন যে নির্বাচন করেছিল, তা অসাংবিধানিক। যদি তা-ই হয়, তাহলে এরপর যে সরকার এসেছে এবং যা যা হয়েছে, সবই অবৈধ হয়ে যায়। এমনকি বর্তমান কমিশনও অবৈধ হয়ে যায়।

গুরুতর অসদাচরণ’

এই কমিশনের বিরুদ্ধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুতর অসদাচরণ, আর্থিক অনিয়মসহ ৯টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে তা তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। গত বছরের ১৭ জানুয়ারি তাঁরা এ বিষয়ে আরেকটি চিঠি দেন রাষ্ট্রপতিকে। তবে এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপের কথা জানা যায়নি।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের ৫৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক এক বিবৃতিতে সংবিধানের আলোকে আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে নতুন নির্বাচন কমিশনের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, বর্তমান ও এর আগের নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কারণে নির্বাচনী ব্যবস্থায় মানুষের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষের আস্থা ফেরাতে নির্বাচন কমিশন এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুল মতিন  বলেন, এই ইসি নিয়ে বলার মতো কিছু নেই। এর চেয়ে খারাপ নির্বাচন কমিশন এর আগে কখনো হয়নি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!