ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ফরিদপুরের বহুল আলোচিত ২ হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ও সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী এবং শেগ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তার আগে সোমবার রাত ২টার দিকে ঢাকার ভাটারার বসুন্ধরার জি ব্লক হতে তাকে ২ হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী হিসেবে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় নিয়ে আসা হয়।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় এব্যাপারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, অর্থপাচার মামলায় খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। ওই মামলায় তিনি চার্জশিটভুক্ত আসামী। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঢাকার ভাটারার বসুন্ধরার জি ব্লক এলাকা হতে তাকে আটক করা হয়।
তিনি বলেন, বিগত দিনে মোহতেশাম বাবর দলীয় ক্ষমতা এবং তার ভাইয়ের ক্ষমতাসহ সকল ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফরিদপুরের সকল ধরনের টেন্ডার থেকে কমিশন বাণিজ্য এবং চাকরি বাণিজ্য করে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পত্তি গড়েন। ২০২০ সালে বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে তার ছত্রছায়ায় হাতুড়ি বাহিনী এবং হেলমেট বাহিনী আত্মগোপনে চলে যায়।
তিনি জানান, সিআইডির দায়েরকৃত ডিএমপির কাফরুল থানার ২৪ নং মামলায় তদন্ত শেষে তার অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তার বিরুদ্ধে আদালত হতে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়।
জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। গত গত ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনের বিরুদ্ধে সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর ছাড়াও আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত, বরকতের ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, সাবেক মন্ত্রীর এপিএস এএইচএম ফুয়াদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
এদিকে খন্দকার মোহতেশাম বাবরের গ্রেফতারে শহরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে সাধারণ নাগরিক।
প্রসঙ্গত, খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর জেলা সদরের গোয়ালকান্দির মৃত নুরুল হোসেন মিয়ার সেঝো ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং দুই ছেলে এক মেয়ে রয়েছে তার।