ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই মিডনাইট হাসিনা সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে। সংবিধান, আইন, বিচার ব্যবস্থা সব কিছুতেই এ অবৈধ সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে জনগণ কাঙ্ক্ষিত অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে ফুঁসে উঠছে।
তিনি বলেন, জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গুম, খুন করে এবং নানা ধরনের হেনস্তা, হয়রানি করে সারা বিশ্বে আওয়ামী লীগ সরকার একটি বিনা ভোটের ফ্যাসিস্ট সরকার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এ সরকার বুঝতে পেরেছে, তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে, এ জন্য আখের লুট-পাটে ব্যস্ত তারা। দ্রব্যমূল্য ক্রয় সীমার বাহিরে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে গেলেও সরকারের মন্ত্রীরা মানুষের দুঃখকে নিয়ে খেল তামাশা করছে।
বুধবার দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে অবৈধ ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের মা। মাদার অব ডেমোক্রেসি হিসেবে তিনি উপাধি পেয়েছে। তাকে মুক্তি দিতেই হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও বীরের বেশে দেশে ফিরে আসবেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন। এ লক্ষ্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে এ ব্যর্থ অযোগ্য বিনা ভোটের লুটেরা সরকারকে ক্ষমতা থেকে তাড়াতে হবে। দেশ ও গণতন্ত্র আজ বিপন্ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। ব্যাংক বিমা সহ সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী সরকারি লুটেরাদের -বাণিজ্য বিলাস বহল বাড়ী নির্মাণ করেছে। বিদেশি বিভিন্ন ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছে। দ্রব্যমূল্যে যারা নিয়ন্ত্রণ করে তারা সরকারের লোক, তারাই সিন্ডিকেট তৈরি করে একদিকে লুটপাটে ব্যস্ত, অন্যদিকে জনদুর্ভোগ বাড়াছে।
স্মরণসভা শেষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের আত্মার মাগফিরাত ও দেশের সার্বিক সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়াও মোনাজাত করা হয়। নেতৃবৃন্দ দুপুরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের কবর জেয়ারত করে, প্রয়াত এ নেতার বাড়ীতে আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে অংশগ্রহণ করেন। তবে এসব অনুষ্ঠানে নোয়াখালী জেলা বিএনপির কোনো নেতা এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন সমূহের একটি বৃহৎ অংশ উপস্থিত ছিলেন না।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুক, সাবেক এমপি ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম নেতা অধ্যাপক শাহ আলম, যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মওদুদ এসোসিয়েটস এর আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ তাজুল হোসেন, ব্যারিস্টার আবদুল্লা আল মামুন মাহমুদ প্রমুখ।
স্মরণ সভায় বক্তাগণ বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ছিলেন গণতন্ত্র ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তির অতন্দ্র প্রহরী। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু তিনি এ সরকারের রাজনৈতিক রোষানল এবং প্রতিহিংসায় পড়ে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা দেখে যেতে পারেননি। বৃদ্ধ বয়সেও এ ফ্যাসিস্ট সরকার আন্তর্জাতিক আইন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।
তারা বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদকে ৩০-৪০টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছিল। শারীরিক ও মানুষিক চাপে পড়ে তিনি অসুস্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করেন। বিএনপি অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ও দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা গায়েবি মামলা দিয়ে দেশকে একটি জেলখানায় পরিণত করেছে এ বিনা ভোটের সরকার।