ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ১৯৭৫সালের ১৫ই আগষ্ট সপরিবারে শেখ মুজিব হত্যায় তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল কে এম শফিউল্লার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেনাপ্রধান শফিউল্লাহকে বলেছিলেন শফিউল্লাহ তোমার আর্মি আমাকে আক্রমণ করেছে। তুমি দেখো।’ ‘দেখছি’ বলেও কোনো কিছু করেনি। দ্বিতীয়বার বঙ্গবন্ধু আবার শফিউল্লাহকে ফোন করে বলে ‘তুমি দেখো আমার কামালকে ওরা হত্যা করেছে। তুমি কি করো। তখন সে বঙ্গবন্ধুকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছিল।’ গতকাল বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সের ১ নম্বর গেটের সামনে নির্মিত প্যান্ডেলে জাতির পিতার ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শেখ সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনোদিন কারো কাছে মাথা নত করতে শেখেননি। আত্মসমর্পণ করতে শেখেননি। তার কিছুক্ষণ পর বঙ্গবন্ধুকেও হত্যা করা হয়। কিন্তু শফিউল্লাহ যদি মাত্র এক ট্রাক আর্মিও পাঠাতো তাহলে বঙ্গবন্ধু এভাবে মারা যেতেন না। সে তা করেনি। বরং তিনি রেডিও সেন্টারে গিয়ে খন্দকার মোস্তাক আর খুনিদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে বাঙালির জন্য সারাজীবন কষ্ট করেছেন, কোনোদিন আরাম আয়েশ করেননি, সেই বাঙালি মীরজাফর মোস্তাক-জিয়া চক্র ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের কলঙ্কিত করেছে। জাতির স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য আল্লাহতালা তাকে পাঠিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যুগে যুগে আসবেন না। তার দেশ প্রেম, ত্যাগ, মানুষের জন্য ভালোবাসা বিশ্বে কতোজনের আছে আমার জানা নেই। তিনি আরও বলেন, শফিউল্লাহ এখনো বেঁচে আছে, কিন্তু মানুষ তাকে আজ ঘৃণা করে। তিনি খালেদ মোশারফকেও বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য দায়ী করেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পরিণতি সম্পর্কে শেখ সেলিম বলেন, কর্নেল তাহেরকে বঙ্গবন্ধু চাকরি দিয়েছিলেন। সেই তাহেরও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য গণবাহিনী করেছিল। সশস্ত্র বাহিনী করেছিল। সেনাহিনীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সে বিপ্লবী গ্রুপ তৈরি করেছিল। জিয়ার সঙ্গে একত্রিত হয়ে রেডিও স্টেশনে গিয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে চায়। কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জিয়ার সঙ্গে তার দ্ব›দ্ব হয় এবং এ নিয়ে কর্নেল তাহেরের করুণ পরিণতি হয়। তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
শেখ সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই।বঙ্গবন্ধুর নাম খুনিরা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু যতোদিন বাংলার মানুষ থাকবে, বাংলার ইতিহাস থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। বঙ্গন্ধুর দৈহিক মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু তার কোনদিন মৃত্যু হবে না। বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে চিরদিন নক্ষত্রের মতো জ্বলবে।