ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সন্মানিত সদস্য এবং সাবেক মনত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭১ সালে যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেগুলো এ আওয়ামী লীগ সরকার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে এবং দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আজ শুক্রবার (২৫ মার্চ) চট্টগ্রামের নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, যদি সত্য ঘটনাগুলো সামনে আসে তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকে না। আজকে যদি মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে বইয়ে লেখা হয়, তাহলে তারা জানে তারা যে মিথ্যাচার করছে, তা সব ক্ষেত্রে ধরা পড়ে যাবে। কিন্তু এটাই সত্য যে ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাস বিকৃতি থেকে দেশটাকে মুক্ত করার জন্য সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। এসময় তিনি আগামী ২৭ মার্চ (রোববার) কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কর্মসূচি সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সব দেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, সবাই সব সময় তা সমুন্নত রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু বিশ্বের কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো মুক্তিযুদ্ধকে বেচাবিক্রি করার কালচার নেই। আর এটা ক্ষমতাসীনরা যখন করে তখন সেটা ইতিহাস তো হই না, এটা প্রোপাগান্ডা হতে পারে।
তিনি বলেন, বিগত চৌদ্দ বছর ধরে এই বিএনপির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে একটা বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ, কিন্তু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হয় না। কতটা অমানবিক এ সরকার। সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে এ সরকারকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন মাইলফলক উন্মোচন করার জন্য ২৭ মার্চ সভা করছি। বিএনপির নীতি নির্ধারকরা অনেক আলাপ আলোচনা করে এসিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। জাতির ক্রান্তিকালে ইতিহাস বিকৃতি থেকে মুক্ত করার জন্য এই কর্মসূচি। যেহেতু মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস, সেহেতু এই মাসে শহীদ জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে হবে। একটি দল যখন আত্মসমর্পণ করেছে, সেখানে শহীদ জিয়ার আবির্ভাব ঘটেছে, তিনি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার যে কাজটি করেছিলেন সেটি জাতিকে জানাতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ জিয়ার শাসন আমল ছিল উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়াউর রহমান বহুবিধ সাফল্যের অধিকারী। স্বল্প সময়ের শাসনামলে নানা সঙ্কটে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতা শহীদ জিয়ার অন্যতম অবদান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডাঃ শাহাদত হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ হারুনের পরিচালনায় প্রস্তুতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রমুখ।