ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘বিএনপির নেতারা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর নারী মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর আর কি হতে পারে ? কী আর বলব?
গতকাল শনিবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আর আগে শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোষ হলো সত্য কথাটাও ঠিক মতো বলতে পারে না। অথচ একটা পার্টির সিনিয়র নেতারা মিথ্যে বলতে বলতে সত্যে পরিণত করতে চান।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ প্রমাণ করেছে যে, আমরা ৭ মার্চের ভাষণে শপথ নিয়েছিলাম দেশমাতৃকার জন্য প্রয়োজনবোধে রক্ত দেব, জীবন দেব এবং সেই সত্যের বহিঃপ্রকাশ কিন্তু সারা বাংলাদেশেই ঘটেছিল, শুধু রাজারবাগে নয়।’
কমিশনার বলেন, ‘রাজারবাগ থেকে ওয়ারলেসে সারাদেশে ঘোষণা হয়েছিল যে, আক্রমণ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইপিআর, সব যায়গায় আক্রমণ হলো। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতির চূড়ান্ত কাজটি পুলিশের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি জেলায় পুলিশের অস্ত্র মানুষকে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের হাবিলদাররা দলে দলে ছাত্রদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে যত পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছে, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের আর কোনো বাহিনীতে এত প্রাণহানি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা জানতে পারলে ভবিষ্যতে আমাদের সাহসী সন্তানরা, মেধাবী সন্তানরা এ বাহিনীতে যোগদান করতে আগ্রহী হবে এবং দেশে সেবার ব্রত নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করবে বলে আমি মনে করি।’
ডিএমপি প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সাসটেইনেবল উন্নয়নের জন্য সাসটেইনেবল ল অ্যান্ড অর্ডার ও নিরাপত্তা দরকার। চিন্তা করুন, যদি হলি আর্টিজানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন কোথায় থাকতো? বাংলাদেশের সমস্ত মেগা প্রজেক্ট যেগুলো এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারতাম না। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এদেশে কাজ করতেন না। আমাদের যে দুজন পুলিশ সদস্য জীবন দিয়ে দেশকে এই জঙ্গি সন্ত্রাস থেকে যে মুক্ত করেছেন, আগুন সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করেছেন, আমরা তাদের বীরত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘রাজারবাগে পুলিশ কনস্টেবল প্রথম গুলি ছুড়েছিল। কে তাকে উজ্জীবিত করেছিল? অথচ একটি দলের নেতারা বলেন, মানুষ নাকি দিগভ্রান্ত হয়েছিল। তাহলে রাজারবাগের পুলিশ, সারাদেশের পুলিশ কীভাবে বুঝেছিল? জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণে যেভাবে বলেছেন, এরপর ফরমালি আর স্বাধীনতার ঘোষণার তেমন কোনো প্রয়োজন ছিল না। সেই ভাষণ পুলিশকে উজ্জীবিত করেছিল।’