ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যাালয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনায় এবার ছাত্রলীগের ৩৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হামলায় আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মানসুরা আলম।
চুরি, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রোববার (২৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালতে এ মামলা করেন তিনি। বিএনপিপন্থী আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমি যুগান্তরকে এ তথ্য জানান।
দেলোয়ার জাহান রুমি বলেন, রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যা জিস্ট্রেট শান্তা ইসলাম মল্লিকের আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যাপলয়ের আইন শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা আলম ছাত্রলীগের ৩৩জন বিভিন্ন সারির নেতার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত শাহাবাগ থানাকে আগামী ২৬ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পূর্ব ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচী অনুযায়ী দলের নেতাকর্মীরা দোয়েল চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে বের হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ এবং বিভিন্ন ইউনিটের ‘সন্ত্রাসীরা’ ছাত্রদলের মিছিলে অতর্কিত হামলা শুরু করে। এক পর্যায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যাীলয়ের আশেপাশে আশ্রয় নিলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসীরা’ ঢাবিতে প্রবেশ করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর লোহার রড, রাম দা, চাপাতি বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ছাত্রলীগের নেতারা ওই হামলার নেতৃত্ব দেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন মানসুরা আলম।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তাদের হামলায় মামলার বাদি মানসুরা আলম, ঢাবি ছামত্র দলের যুগ্ন আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, জিয়া হলের সভাপতি তারেক হাসান মামুন, বিজয় একাত্তর হলের সহসভাপতি তানভীর আজাদী, ঢাকা কলেজ সভাপতি শাহিনুর শাহীন, সাহাব উদ্দিন আহাম্মেদ, বাংলা কলেজ কর্মী আব্দুল কাইয়ুম, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদল কর্মী শিহাব উদ্দিন শিহাব ও কবি নজরুল কলেজের নাহিদসহ অনেক নেতাকর্মী আহত হন। তাদের হত্যাার উদ্দেশে এ হামলা করা হয়েছে বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় বিবাদীরা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যাালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমীন রহমান, সহসম্পাদক রাশেদ ফেরদৌস আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন,সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদার, সহ সম্পাদক আমান উল্যা আমান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামীম পারভেজ, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ হিল বারী, উপদপ্তর সম্পাদক মো. নাজির ও খান মোহাম্দ শিমুল, উপ আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শাহিন তালুকদার।
মামলার অপর বিবাদীরা হলেন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সাবেক সহসভাপতি মিজানুর রহমান পিকুল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যাবলয়ের শামছুন নাহার হল শাখার সভাপতি খাদিজা আক্তার উর্মি, অমর একুশে হল শাখার সভাপতি এনায়েত এইচ মনন,সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগ ও সহসভাপতি রাকিব হোসেন, জগন্নাথ হল শাখার কর্মী অভিজ্ঞান দাস অন্তু, ঐশিক শুভ্র ও সৌরব চক্রবর্তী, বিজয় একাত্তর হলের সাবেক সহ সভাপতি মজিবুল বাশার, সলিমুল্লাহ হলের ছাত্রলীগ কর্মী নাজিমুদ্দিন সাইমুন, চুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকের, ছাত্রলীগ কর্মী মাহমুদ চৌধুরী, এফ রহমান হল শাখা সভাপতি রিয়াজ ও কর্মী আব্দুর রহীম, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারিয়াল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ, এস এম হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী সায়েম, মুজিব হলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, শহিদুল্লাহ হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মুনিম শাহরিয়ার, সূর্য সেন হল শাখার কর্মী নাহিদ সাদি ও ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজ শাখার সহসম্পাদক সামাদ আজাদ জুলফিকার।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৭ মে শুক্রবার ছাত্রদল নেতাকর্মীদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
এতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, জ্যেষ্ঠ সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন, ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. আমানুল্লাহ আমানসহ ১৭ জনের নামোল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।