ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ড. ইউনূস তার একটা এমডি পদের লোভে সে বিশ্ব ব্যাংককে দিয়ে, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করিয়েছিল। তারা ভেবেছিল আমরা এখানে স্যারেন্ডার করব, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে এটা মনে রাখবেন। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি, করবও না।
তিনি আরও বলেন, এই দেশকে আমরা ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। দেশের মাথা কোনো রকম হেয় হোক এটা কোনো দিন করব না। ক্ষমতা আমার কাছে বড় কিছু না। ক্ষমতা আমার কাছে মানুষের জন্য। কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, সেটাই করে যাচ্ছি। এই দেশের মানুষ যেন গরিব না থাকে, দরিদ্র না থাকে, কেউ ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে সে চেষ্টাই করেছি। দেশবাসীর সমর্থনই আমার বড় শক্তি।
বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে ‘জাতিকে পদ্মা সেতু উপহার দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ’ জানিয়ে আনা প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূসের নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, একটা এমডি পদের জন্য একটা দেশের এতো বড় ক্ষতি কীভাবে করে? যে সমস্ত ই-মেইল দেওয়া হয়েছে, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের কাছে সব রক্ষিত আছে। এই যে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা এটা মেনে নেওয়া যায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্ব ব্যাংকের দোষ দিচ্ছি। কিন্তু তাদের দিয়ে যারা কাজটা করালো বা করানো হয়েছে, তাদের কিছু বলছি না। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে স্বাক্ষর করে টাকা বন্ধ করে দিয়ে গেছেন। তার পর চাপ আসলো অমুককে গ্রেফতার করতে হবে, তাহলে টাকা দেবে। আমি বলেছি, আমার কোনো অফিসারকে বা আমার কাউকে আমি অপমান করতে দেব না। সে সময় যোগাযোগমন্ত্রীকে অপসারণ আর মোশাররফকে তো গ্রেফতার করেই দিলো।
তিনি বলেন, আমি জানি, কোনো টাকা ছাড় হয়নি। তাই দুর্নীতিটা কোথায় করা হলো। আমি প্রমাণ চাচ্ছি, তারা দুর্নীতির স্বপক্ষে একটা কাগজও দিতে পারেনি। তারপর আসল অমুককে গ্রেফতার করলে টাকা দেবে এ ধরনের প্রস্তাব। আমি বললাম- পদ্মা সেতু আমি করব না। যে দিন নিজের টাকায় করতে পারব, সেদিন করব। কিন্তু আমার দেশকে অপমান করে করব না। তখন আমাকে ভয় দেখানো হলো- যদি এটা না হয় আপনার নির্বাচনের কী হবে। আমি বললাম জনগণ ভোট দেবে, না দিলে ক্ষমতায় আসব না।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমেরিকার চাপে গ্যাস বিক্রি না করলে ক্ষমতায় আসতে দেবে না বলা হলো। গ্যাস বিক্রি করিনি, তাই তখন আমি ক্ষমতায় আসতে পারিনি। খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল, তাই সে ক্ষমতায় এসেছিল। এটা তো চোখের সামনের ঘটনা আমার। সে মুচলেকা দিয়ে গেছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে কী হয়েছে সবাই তা জানে।
তিনি বলেন, একটা মানসিক যন্ত্রণা আমার পরিবারের ওপর দিয়ে গেছে। আমার মেয়ে, আমার ছেলে, আমার বোন তাদের সবার ওপর যে মানসিক চাপ গেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। জয়কে নিয়ে যখন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে- তোমার মাকে বল, তোমার বিরুদ্ধে অডিট হবে। তখন বলেছে করো, তবে আমি আমার মাকে এটা বলতে পারব না। আমার বিরুদ্ধে যত তদন্ত আছে করতে পারো, আমি এখানে কোনো অন্যায় করিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, কাকে না তারা চাপ দিয়েছে। এই রকম অবস্থায় আমি কিন্তু থেমে যাইনি। আমার সততাই হচ্ছে আমার শক্তি। আর শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। এই জনগণকে অপমান করে আমি কোনো কিছু করব না। আমি যখনই সেতু নির্মাণ শুরু করে দিলাম, তখনই সবার টনক নড়ল। তখন বাংলাদেশকে সবাই সমীহ করতে শুরু করল। সবাই দেখল, হ্যাঁ বাংলাদেশ পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বলেছিল কেউ আমাদের দাবায়া রাখতে পারবে না। তো কেউ আমাদের দাবায়া রাখতে পারে নাই। পারবেও না ইনশাআল্লাহ। এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।