ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিনা অপরাধে পুলিশের গুলিতে পঙ্গুত্ব বরণকারী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফকে আটক ও গুম করে রাখা নির্মম মনুষ্যত্বহীনতা এবং ভয়ানক অশুভ সঙ্কেত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার পুলিশের গুলিতে পঙ্গুত্ব বরণকারী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফ চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নিয়েও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পুলিশ কর্তৃক সাইফুল ইসলাম সাইফকে আটক এবং তার কোনো হদিস না দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই ঘটনা আতঙ্কজনক, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চট্টগ্রাম মহানগর নেতা সাইফুল ইসলাম সাইফকে এভাবে আটক ও গুম করে রাখা নির্মম মনুষ্যত্বহীনতা এবং ভয়ানক অশুভ সঙ্কেত। এর আগেও তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে দুই রাউন্ড গুলি করে, তাতে সাইফুল ইসলাম সাইফ চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায়। আবারো তাকে একই কায়দায় আটক এবং তার কোনো সন্ধান না পাওয়া গভীর উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে এবং ভয়াবহ আওয়ামী দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতেই সরকার বিরোধী দল ও মতকে দমনে এখন আরও হিংস্র রূপ ধারণ করেছে। এটি সবার নিকট দৃশ্যমান যে, সাইফুল ইসলাম সাইফকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। সাইফুল ইসলাম সাইফ পুলিশের নিকটেই আছে। তাকে এভাবে নিখোঁজ করে রাখায় দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও তার পরিবার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি অবিলম্বে সাইফুল ইসলাম সাইফকে জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে গত ২৬ জুন ময়মনসিংহের পাগলা থানার পাঁচবাগে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পাগলা থানা যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম এখলাসের ওপর হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙ্গে দেয় এবং যুবদল নেতা শাকিল আহমেদ সজলকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। তাদের মোটর সাইকেলও ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। ছাত্রলীগ কর্তৃক এই সন্ত্রাসী ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের বিষবাস্প এখন যেন আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিশে^র গণধিকৃত সকল স্বৈরাচারকে টেক্কা দিয়ে জনসমর্থনহীন বর্তমান আওয়ামী সরকার অবর্ণনীয় দুঃশাসন জারি রেখে বিএনপি এবং বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তাকে এখন চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর মহাসমারোহে মধ্যরাতে ভোট ডাকাতির পর সরকারের আশকারায় দুষ্কৃতকারীরা দেশব্যাপী লাগামহীন খুন জখমে মেতে উঠেছে। স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের যাঁতাকলে দেশের মানুষ সর্বদা পিষ্ট হচ্ছে। অজানা আতংক আর ভয়াল পরিবেশ মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপনকে করে তুলেছে বিপর্যস্ত। গত ২৬ জুন ময়মনসিংহের পাগলা থানার পাঁচবাগে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পাগলা থানা যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম এখলাসের ওপর হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙ্গে দেয়াসহ যুবদল নেতা শাকিলকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত গুরুতর আহত করার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো- দেশে আইনের শাসন নেই, দেশ এখন সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। আইনের শাসনের অনুপস্থিতি এবং সাজা পাবার পরও সরকারের আনুকূল্যে পার পেয়ে যাচ্ছে বলেই সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে দেশব্যাপী বিরোধী দলসহ প্রতিবাদী মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত করতে আরও উৎসাহিত হচ্ছে। ময়মনসিংহের পাগলা থানাধীন পাঁচবাগে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কাপুরোষোচিত হামলার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। হামলার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম এখলাস এবং শাকিল আহমেদ সজলের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
এছাড়া বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স পৃথক বিবৃতিতে গত ২৬ জুন ময়মনসিংহের পাগলা থানার পাঁচবাগে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পাগলা থানা যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম এখলাসের ওপর বিনা উস্কানিতে হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙ্গে দেয়াসহ যুবদল নেতা শাকিল আহমেদ সজলকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে বলেন, সরকারের পায়ের নিচের শেষ মাটিটুকুও এখন সরে গেছে বলেই তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালাতে উন্মাদ হয়ে গেছে। এরই অংশ হিসেবে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম এখলাস এবং শাকিল আহমেদ সজলের ওপর নির্মম হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর আহত করেছে ছাত্রলীগের চিহ্নিত গুন্ডারা। তবে এসব অপকর্মের মাধ্যমে সরকার নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না বলে উল্লেখ করেন সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
বিবৃতিতে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স অবিলম্বে যুবদল নেতৃদ্বয়ের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। তিনি তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।