DMCA.com Protection Status
title=""

নিউইয়র্কে একজন বাংলাদেশী বাদলের হিরো হবার গল্প

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ আর স্প্যানিশ অধ্যুষিত এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসার প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য রকমের সাফল্য দেখিয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান আকতার হোসেন বাদল।

আর এই সাফল্যের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে ‘আরএলবি গ্রুপ’। সর্বশেষ চতুর্থ শাখার উদ্বোধন করা হলো গত ২৪ জুন সন্ধ্যায় অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। ২০১৫ সালে প্রথম শাখা চালু হয় লিমব্রুকে। ৪টির দুটি সাফোক কাউন্টি এবং অপর দুটি নাসাউ কাউন্টিতে। ব্যবসার প্রসারের মধ্যেই এলাকার চেম্বার অব কমার্সের নেতৃত্বেরও অংশীদার হয়েছেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান এই আকতার হোসেন বাদল। লং আইল্যান্ডের কপিয়েগ সিটিতে ১২১০ বি মন্টোক হাইওয়েতে ফিতা কেটে চতুর্থ শাখার উদ্বোধনের সময় নাসাউ এবং সাফোক কাউন্টির এক্সিকিউটিভসহ চেম্বার অব কমার্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন করোনাকালেও আরএলবি গ্রুপের স্বাস্থ্য-সেবার।

অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সামগ্রীর আরো দোকান এলাকায় থাকলেও চরম সেই মহামারিকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্য কেউ দরজা খোলা রাখেননি। আরএলবি গ্রুপের স্টোরগুলো যথারীতি খোলা ছিল এবং ন্যূনতম লাভে পণ্য বিক্রি করেছেন। যাদের কাছে অর্থ ছিল না তাদেরকে ফ্রি দিয়েছেন স্বাস্থ্য-সুরক্ষার নানা সামগ্রী। এলাকার নির্বাচিত কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে এসে শুধু কথকতার মধ্যেই বাদলের এসব গুণাবলীকে আবদ্ধ রাখেননি, তারা প্রক্লেমেশন, সাইটেশন এবং অভিনন্দনপত্রও এনেছিলেন-যা বিপুল করতালির মধ্যে হস্তান্তর করেছেন। এ সময় প্রদত্ত বক্তব্যে বাদল সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনের পথে আপনাদের এই মতামত আমাকে উৎসাহিত করবে। অনুপ্রেরণা দেবে সততা-নিষ্ঠার সাথে কাজে। আমি সব সময় গ্রাহকের সামর্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। বেশী বিক্রির লক্ষ্যে কম লাভে বিশ্বাসী।

গত ৫ বছরে তার সুফলও পেয়েছি। নির্মাণ ব্যবসায়ী/ঠিকাদাররা একবার এলে আর কখনো অন্য পথে পা বাড়াননি। তাঁরাই আমার ব্যবসা প্রসারে বিশ্বস্ত বন্ধুতে পরিগণিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে কপিয়েগ কাউন্টি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য হয়েছেন আকতার হোসেন বাদল। সেই চেম্বারে একমাত্র অশ্বেতাঙ্গ তিনি। এবার সদস্যপদ পেলেন ‘দ্য লিন্ডেনহার্স্ট চেম্বার অব কমার্স’র। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সাফোক কাউন্টির প্রধান নির্বাহী স্টিভেন বেলোন, লেজিসলেচার কেভিন জে ম্যাককেফরী, লিন্ডেনহার্স্ট চেম্বার অব কমার্স’র প্রেসিডেন্ট যোয়্যান বয়েটশার, বেবীলন টাউনের সুপারভাইজার রিচার্ড বি শেফার, ডেপুটি সুপারভাইজার টনি মার্টিনেজ, কপিয়েগ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট শ্যারন ফ্রোটেজ, টুলি কন্সট্রাকশনের মালিক টম টুলি, চীফ ইঞ্জিনিয়ার ডীন ডিভোস প্রমুখ। বেশ কিছু গ্রাহক-ব্যবসায়ীও ছিলেন অনুষ্ঠানে। সকলেই বাদলের ব্যবসার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।

কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের ছাত্রাবস্থায় ১৯৮৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন আকতার হোসেন বাদল। লেখাপড়ার পর ১৯৯০ সালের ১৩ মার্চ নিউইয়র্কে এসে ব্রঙ্কসে বসতি গড়েন। চাকরি নেন ‘ফ্লোরশিম শো’ (জুতার স্টোর) তে। সেই দোকালে সেলসম্যানের কাজের সময়েই পরিচয় ঘটে এলাকার একজন স্টেট এ্যাসেম্বলীম্যানের সাথে। সেই সূত্রে কন্সট্রাকশন ব্যবসার লাইসেন্স করেন বাদল। সিটি, স্টেটের ঠিকাদারি নেন। সবকিছুই ছিল ইউনিয়ন জব। ফলে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এ প্রসঙ্গে বাদল উল্লেখ করেন, কাস্টমার সার্ভিসকে আমি সবসময় প্রাধান্য দিয়ে আসছি। সকল কাজ নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করি। এটাই হচ্ছে মূলমন্ত্র আমার আজকের পর্যায়ে আসার।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই জড়িয়ে থাকা বাদল বলেন, ‘ব্যবসার ফাঁকে দলের প্রয়োজনেও শ্রম ও মেধার পাশাপাশি অর্থের বিনিয়োগও ঘটাচ্ছি। বিএনপির রাজনীতির পরিপূরক তদ্বিরের জন্যে কংগ্রেসম্যান, সিনেটরগণের সাথে মাঝেমধ্যেই বৈঠকে মিলিত হচ্ছি। টেলি কনফারেন্সও করে আসছি ম্যাডামের বর্তমান অবস্থার আলোকে। সবকিছু করছি দলের প্রতি অবিচল আস্থাশীল একজন কর্মী হিসেবে। বাদল বলেন, মূলধারার চেম্বারের সাথে সম্পর্ক কাজে লাগাচ্ছি বিএনপির রাজনৈতিক পারপাস সার্ভের জন্যও।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!