ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান জুয়েলের প্রাকাশ্য দিবালোক জার্মানীর তৈরী অত্যাধুনিক হকলার & ককলিন- এমপি-৫ অস্ত্র প্রদর্শন নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক জুড়ে ভাসছে জুয়েলের সেই অস্ত্র প্রদর্শনের ছবি। মিয়াবাজারস্থ গ্রীন ভিউ রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়ানো সেই ছবিতে দেখা যায়, জুয়েল ডান হাতে রেখেছেন সেই অস্ত্র আর বাম হাত দিয়ে সিগারেট টানছেন। ফেসবুকে মুহূর্তেই ভাইরাল হওয়া ছবিটি নিয়ে এখন নানা আলোচনা- সমালোচনা চলছে। আলোচিত এই অস্ত্রের লাইসেন্সের খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করেছেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। তারা ইতিমধ্যে ওই অস্ত্রের লাইসেন্স আছে বলে তথ্য পেয়েছেন। এখন লাইসেন্সটি বৈধ কিনা সেটি যাচাই-বাছাই করছেন।
লাইসেন্স থাকলেও অন্য কোনো শর্ত ভঙ্গ হয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের রেঞ্জ কার্যালয় থেকে কুমিল্লা জেলার এসপিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি যেন অবিলম্বে সেই অস্ত্র নিকটস্থ থানায় জমা দেয়।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, লাইসেন্স আছে তবে আমরা সেটি যাচাই-বাছাই করে দেখছি। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, জানতে পেরেছি অস্ত্রটির লাইসেন্স আছে।
তিনি আরও বলেন,আমি এসপিকে নির্দেশ দিয়েছি অস্ত্র থানায় জমা দেয়ার জন্য। আর যদি লাইসেন্স থাকে আর লাইসেন্সের কোনো শর্ত ভঙ্গ করে থাকে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। তিনি বলেন, লাইসেন্স থাকলেই এভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করে মানুষকে কোনোভাবেই ভয়-ভীতি দেখানো যাবে না।
যেভাবে অস্ত্র প্রদর্শনের ছবি প্রকাশ হয়েছে এটি দৃষ্টিকটু। অবশ্যই আমরা একটা ব্যবস্থা নেবো।
সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, যারা ক্ষমতার খুব কাছাকাছি এবং আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ভালো যোগাযোগ রেখে তারা সমাজ ও এলাকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। তারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য নিজেদের এভাবেই প্রস্তুত করে। বিভিন্ন ঘটনায় আমরা অস্ত্র প্রদর্শনের যে নমুনা দেখি সেখান থেকে বোঝা যায় একদিকে যেমন অবৈধ অস্ত্রের সংখ্যা বাড়ছে ঠিক তেমনি এসব অস্ত্রের প্রদর্শন ও ব্যবহারকারীদের সংখ্যাও বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা বা তাদের যে কার্যক্রম থাকার কারণে অপরাধীরা ভয়ের মধ্যে থাকবে- এমনটি আমাদের চোখে পড়ে না।