ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নির্বাচনের সময় কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায় তাহলে প্রতিপক্ষকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়াতে বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে আয়োজিত সংলাপে তিনি এমন কথা বলেন। সিইসি বলেন, আমরা সহিংসতা বন্ধ করতে পারবো না। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ খেলোয়াড় তো আপনারা। আপনারা মাঠে খেলবেন আর আমরা তো রেফারি। আমাদের অনেক ক্ষমতা আছে। আমরা ক্ষমতা প্রয়োগ করবো। নির্বাচনকে অংশগ্রহণ করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। দলগুলোর সহায়তা ছাড়া আমরা ব্যর্থ হয়ে যাবো জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সমন্বিত প্রয়াস থাকবে।
কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায় তাহলে আপনাকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়াতে হবে। আপনি যদি দৌড় দেন, তাহলে আমি কি করবো? আমরা সাহায্য করবো। পুলিশের ওপর, সরকারের ওপর আমাদের কমান্ড থাকবে। সকালে এনডিএমের সঙ্গে সংলাপের সময় তলোয়ারের বিপরীতে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিলেও তৃতীয় দফায় বাংলাদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে সংলাপে তলোয়ার-রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এ সময় সিইসি বলেন, নির্বাচন এক ধরনের যুদ্ধ। অনেকেই বলছেন, আসেন যুদ্ধের মাঠে আসেন। সেখানে আসলে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলে হবে না। আপনাদের জনসমর্থন নিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। আপনারা তলোয়ার-রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ করবেন না। আপনাদের জনসমর্থন যেগুলো আছে তারা আসবে। আপনারা ব্যালট নিয়ে যুদ্ধ করবেন। সেই যুদ্ধটা আপনাদের করতে হবে। হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি বারবার বলেছি, রাজনৈতিক দল আর সরকার এক জিনিস নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। কিন্তু যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী তখন তিনি সরকার প্রধান, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নন। এটি বুঝতে হবে। আমরা সরকারের সাহায্য চাইবো। সরকারের সহায়তা ছাড়া নির্বাচনের পরিণতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ইতিপূর্বে আমরা বহুবার বলেছি সকল রাজনৈতিক দল বিশেষ করে প্রধানতম দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেয়া খুবই প্রয়োজন। আমরা কোনো দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করতে পারবো না। তবে সকল দলকে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে আমরা বারবার আহ্বান করে যাবো। সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আজকেও আপনাদের মাধ্যমে সকল দলকে আহ্বান জানাচ্ছি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা না থাকলে জনমতের সঠিক প্রতিফলন হয় না।
পক্ষ-প্রতিপক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাঠ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সম্ভাব্য অনিয়ম, কারচুপি, দুর্নীতি, অর্থ শক্তির বৈভব, পেশিশক্তির প্রয়োগ ও প্রভাব বহুলাংশে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। নির্বাচন কমিশন সকলের অংশগ্রহণ, সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। অন্যথায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমাদের প্রয়াস যতই আন্তরিক হোক, ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। সেটা কাম্য নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। একটি মাত্র দল ৩০০টি আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে সাংবিধানিকভাবে কোনো বাধা নেই। তবে ইতিহাস বলে সেক্ষেত্রে অচিরেই গণতন্ত্রের অপমৃত্যু হবে। স্বৈরতন্ত্র মাথা জাগিয়ে তুলবে। গণতন্ত্রের আরাধ্য পুনরুদ্ধার হয়ে পড়বে দুরূহ। সিইসি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নানাবিধ আশা, হতাশা ও তর্ক-বিতর্ক চলছে। বিতর্কগুলো নিরসন হওয়া প্রয়োজন। ইতিপূর্বে কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা কয়েকটি উন্মুক্ত সংলাপ করেছি। এতে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে। কমিশনের সক্ষমতা ও সাধ্যের সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করে নিয়ে কারণগুলো বারবার ব্যাখ্যা করে বলেছি। ইভিএম নিয়ে পাঁচ-সাতটি কর্মশালা করার পর আমরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এবং বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে উন্মুক্ত সভা করেছি। কেউ কোনো ত্রুটি দেখাতে পারেনি। ইভিএম এবং ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনে তুলনামূলক সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আরপিও-২৬ অনুযায়ী, কারচুপির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে।
সেগুলো প্রতিপালন করা হলে কারচুপি প্রতিরোধ করা সম্ভব। এত কিছুর পরেও অপপ্রচার সমানে চলছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ইভিএম সম্পর্কে বিভ্রান্তি সংশয় থেকেই যাচ্ছে। আমরা সত্যি উদ্বিগ্ন হচ্ছি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অনিয়ম, সহিংসতা, ব্যালট পেপার ছিনতাই হলে প্রতিরোধ কতোটা সম্ভব হবে। আমাদের প্রত্যাশা জাতীয় নেতৃবৃন্দ ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নিবিড়ভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা ও মতৈক্য হয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর নিরসন করে আগামী সাধারণ নির্বাচনের জন্য অনকূল পরিবেশ ও সমতল ভিত্তি সৃষ্টি করবেন। অরাজনৈতিক সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিগণ সংগঠিত হয়ে এগিয়ে এসে জাতির একটি সংকটময় মুহূর্তে তাদের প্রজ্ঞা ও জ্ঞান প্রয়োগ করে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সংলাপে আহ্বান করে আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক মতৈক্য সৃষ্টিতে অবদান রাখতে পারেন। আমরা নির্বাচন করতে চাই অনুকূল পরিবেশ ও শক্ত ভিত্তির ওপর।
এদিকে সংলাপে অংশ নেয়া জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, বিগত কয়েকটি ভোটে আমরা দেখেছি সরকারি দল ব্যতীত অন্য দলের এজেন্টরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এই বিষয়ে প্রায় প্রতিটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয় নাই। স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের প্রস্তাবনা হলো পোলিং এজেন্ট নিয়োগের ব্যবস্থাটি বাতিল করতে হবে। তিনি বলেন, বিকল্প হিসেবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ভোট প্রদানের গোপন কক্ষ ব্যতীত সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। এই সিসিটিভির লাইভ ফুটেজ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দেখার ব্যবস্থা করতে হবে। এ সময় দলটি নির্বাচনকালীন সময়ে জনপ্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি জানায়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ময়দানে আমরা কাজ করি জনগণের কল্যাণের জন্য। এর আগে যখন রাজনীতি ছিল না, গণতন্ত্র ছিল না, তখন যুদ্ধ করে ক্ষমতা নিতো। আজকে যুদ্ধের দিন না, জনগণের ভোটের জন্য আমরা কথা বলি। এখানে তলোয়ার নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না এবং তলোয়ার নিয়ে কেউ আসলে আমরা উল্টো তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াবো- এটা তো আইনের লঙ্ঘন।
আইন তো আমাকে তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে বলে না। সেটা যদি করতে হয় তাহলে পার্লামেন্টে বসে আইন পরিবর্তন করতে হবে। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। একেকজন একেক ডায়লগবাজি করে। একজন বলে খেলা হবে, আর ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই বলে হ্যাঁ এখন খেলা হবে এবং তার দলের পোলিং এজেন্ট বা গুণ্ডাবাহিনী প্রভাবিত হয়ে যায়। তারা বলে আমাদের নেতারা বলেছে খেলা হবে, নে এইবার ব্যাট বের কর, ছুরি বের কর, বন্দুক বের কর, এইবার আমরা খেলবো। এটা আমরা দেখতে চাই না। দলটির যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন বলেন, জনগণ প্রত্যাশা করে, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয় সুপার প্রাইম মিনিস্টার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জনপ্রশাসনকে নিরপেক্ষ এবং পেশাদারভাবে কাজ করতে প্রয়োজনীয় অনুশাসন প্রদান করবেন। অন্যদিকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)। সংলাপে লিখিত বক্তব্যে বিএনএফ জানায়, দেশে সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা, সংসদে শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিএনএফ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে অদ্যাবধি একইভাবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। শুরু থেকেই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করতে হয়েছে।
আগামী দিনগুলোতে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ অনেক কঠিন হবে বলেও জানিয়েছে বিএনএফ। দেশে সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা, সংসদে শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দলটি জানায়, বর্তমানে শান্তিপূর্ণ উপায়ে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে বিএনপিসহ বেশ কয়কটি দল নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে যে সকল দল ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে তাদের প্রতি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আন্তঃদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুসরণে পিছিয়ে আছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পরিচালিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করাও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব এডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আজও গড়ে উঠেনি।
ফলে দেশের প্রতিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে। একাদশ সংসদ নির্বাচন নামে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং সাড়ে তিন বছর অনায়াসেই পার করে দিয়েছে। সাধারণ হিসেবে আর মাত্র দেড় বছর পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। তবে যে পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংঘটিত হয়েছিল, তার সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে, কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে এই আয়োজন সেই ভোটাররা নির্বাচনে এখন আর ভোট দিতে আসেন না। বলতে গেলে ২০১৮ সালের পরে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতি করে কোনো লাভ হবে না, তারা দেশের সেবা করার কোনো সুযোগ পাবে না। বাংলাদেশ কংগ্রেস দাবিগুলোর হচ্ছে-ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংশোধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জন্ম, মৃত্যু ও বয়সের ভিত্তিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্পন্ন করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সরবরাহকৃত তথ্য অনুসারে জাতীয় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এ ছাড়া সকল প্রকার নির্বাচন পরিচালিত হতে হবে নির্বাচন কমিশনের দ্বারা এবং নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে বাধ্য থাকবে। জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা/মহানগর নির্বাচন কর্মকর্তারা এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা রিটার্নিং অফিসার নিযুক্ত হবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত থেকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। জাতীয় বাজেটের ০.০২% নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ করতে হবে যা নির্বাচন কমিশন দলগুলির মধ্যে সমহারে বন্টন করবে। রাজনৈতিক দলগুলো উক্ত অর্থ সমাজ কল্যাণমূলক কাজ ও দল পরিচালনায় ব্যয় করবে যার হিসাব বছরশেষে কমিশন বরাবর জমা প্রদান করতে হবে।
নির্বাচনে সকল প্রকার প্রচারণা হবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যবস্থাপনা ও নির্দেশনা অনুসারে প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মুদ্রণ ফি গ্রহণপূর্বক নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থীর নাম ও ছবি সংবলিত পোস্টার মুদ্রণ করে প্রার্থীদের মধ্যে সমসংখ্যক পোস্টার বিতরণ করবে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে প্রার্থীরা উক্ত পোস্টার প্রদর্শন করবেন। তবে প্রার্থীগণ নিজ উদ্যোগে মাইকিং ও হাতে হাতে প্রচারপত্র বিতরণ করতে পারবেন। নির্বাচনের দিন নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ ছুটি ঘোষণা করতে হবে এবং সকল প্রকার অফিস ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। ভোট চলাকালীন সময়ে দলীয় ক্যাম্প স্থাপন পরিচালনা, ভোটারবাহী পরিবহন ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করতে হবে। ইলেক্ট্রোনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর অবস্থান ও পরিচালনায় গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে এবং ভোট প্রদানের পর প্রতীকসহ মুদ্রিত টোকেন প্রদান পদ্ধতি চালু করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ভোটার উক্ত টোকেনের কপি নির্ধারিত বাক্সে ফেলবেন যা সংরক্ষণ করতে হবে এবং মেশিনে প্রাপ্ত ভোট সংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। তবে বাংলাদেশ কংগ্রেস ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করে এবং ব্যালট পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে।