ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ডা.সাবরিনা ও আরিফুলের মালিকানাধীন জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্মীরা করোনার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই ড্রেনে ফেলে দিতেন বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন সংস্থাটির সাবেক কর্মী হুমায়ুন কবির।
করোনার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার মামলায় গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছিলেন হুমায়ুন কবির। আর আদালতে দেওয়া পুলিশের অভিযোগপত্রে বলা হয়, এই জালিয়াতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফ চৌধুরী, তার স্বামী জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী।
কোভিড ১৯-এর নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী এবং তার স্বামী ও প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল চৌধুরীসহ আটজনকে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১১ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিদের সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালের ২৩ জুন আরিফুল, হুমায়ুন, তানজিনাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানার পুলিশ। পরদিন ২৪ জুন হুমায়ুন ও তানজিনা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে হুমায়ুন জেকেজিতে চাকরি করার সময় কীভাবে করোনার নমুনা সংগ্রহ করতেন, কীভাবে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করতেন, সে ব্যাপারে বিস্তারিত বিবরণ দেন।
মহামারির প্রথম বছর জেকেজির জালিয়াতির ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে এলে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে সরকারি চাকরিতে থাকা চিকিৎসক সাবরিনার যোগসাজশ বিষয়টিকে নতুনমাত্রা দেয়।
প্রসঙ্গত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি হেলথকেয়ার ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয়। এর বেশিরভাগই ভুয়া বলে ধরা পড়ে। এ অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয় এবং দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে দুপুরে সাবরিনা ও আরিফসহ আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
চার্জশিটে সাবরিনা ও আরিফকে প্রতারণার মূলহোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেছেন।