ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চলমান ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ।
রবিবার এ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভার কাছে পাঠিয়ে ঋণ মঞ্জুরের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর আগে ১২ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত আইএমএফের প্রতিনিধি দল সংস্থাটির এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে ঢাকা সফর করে।
এ সময় প্রতিনিধি দলটি সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করে। এ সময়ই এ ঋণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। অবশ্য প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় সফরকালে গত ১৬ জুলাই অর্থমন্ত্রীর কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি তা নাকচ করে দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতত আইএমএফ থেকে কোনো ঋণ নিচ্ছি না।’ সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের বিদেশি ঋণের প্রয়োজন নেই।’ এর মাত্র এক সপ্তাহ পরই ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য সংস্থাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাল বাংলাদেশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী ব্যালান্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তা হিসেবে এ অর্থ চেয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমানোর বিষয়টিকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে নথিতে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেশ কয়েকটি দেশের অর্থনীতিতে মন্দা ও অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। ফলে অনেক দেশই আইএমএফের সহায়তা নিচ্ছে। এ চিঠি পাঠিয়ে সে তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশও। চলতি মাসের শুরুতে আইএমএফ পাকিস্তান ও তানজানিয়াকে যথাক্রমে ৪ বিলিয়ন ও ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই আইএমএফের দ্বারস্থ হলো অর্থ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ এর আগে আইএমএফ থেকে এ রকম আরও চারবার ঋণ নেয়। প্রথমবার ঋণ নেওয়া হয় ১৯৯০-৯১ সালে।
এরপর ২০০৩-২০০৪, ২০১১-১২ এবং সর্বশেষ ২০২০-২১ সালে সংস্থাটি থেকে ঋণ নেয় বাংলাদেশ। তবে কোনোবারই ঋণের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি। যদিও বাংলাদেশ আইএমএফের সদস্য দেশ হিসেবে ১৫০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার দেশ হিসেবে বিবেচিত।