ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে জাতিসংঘ পুলিশ সামিটে যোগ দিতে কঠিন শর্ত সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ভিসা পেয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ।
গতকাল তার ভিসা পাওয়ার বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। আগামী ৩১শে আগস্ট থেকে ১লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে দুই দিনব্যাপী জাতিসংঘের পুলিশ সামিট অনুষ্ঠিত হবে। সামিটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। প্রতিনিধি দলে পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদও রয়েছেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব মুহম্মাদ আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ উপ-মহাপরিদর্শক নাসিয়ান ওয়াজেদ ও সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাসুদ আলম।
গত বছরের ৯ই ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ)। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন র্যাবের সাবেক ডিজি ও বর্তমান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে জাতিসংঘের সম্মেলনে তিনি অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
‘বেনজীর আহমেদকে শর্তযুক্ত ভিসা দেয়া হতে পারে’ শিরোনামে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, জাতিসংঘের পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের অংশগ্রহণ নিয়ে চারদিকে অন্তহীন কৌতূহল। আগামী ৩১শে আগস্ট থেকে পহেলা সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে দুদিনের এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে এমনটাই জানানো হয়েছে সরকারিভাবে।
কিন্তু বাদ সেধেছে ভিসা। বেনজীর আহমেদ ছাড়া বাকি পাঁচজনের ভিসা রয়েছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশ প্রধানের ভিসা বাতিল হয়েছে। গত বছর ১০ই ডিসেম্বর র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। এর ফলে তাদের ভিসা বাতিল হয়ে যায়। বর্তমান পুলিশ প্রধান একসময় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক ছিলেন। ভিসা জটিলতায় বেনজীর আহমেদের পুলিশ সম্মেলনে অংশ নেয়াটা এখনো অনিশ্চিত। যদিও ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে এ নিয়ে একাধিক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি কর্মকর্তারা। কারণ এ নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, শেষ মুহূর্তে শর্তযুক্ত ভিসা দেয়া হতে পারে মিস্টার আহমেদকে। যেমনটা দেয়া হয় কিউবা এবং উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের। তাদেরকে তখন বলা হয় নিউইয়র্ক ছাড়া অন্য কোনো স্টেটে যাওয়া চলবে না। এর সামান্যতম ব্যত্যয় ঘটলে সাথে সাথে ভিসা বাতিল হয়ে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে।
উল্লেখ করা যায় যে, আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদকে শর্ত সাপেক্ষে ভিসা দেয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। নির্ধারিত সম্মেলন ছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচিতে তিনি অংশ নিতে পারবেন না বলে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় তিনি ওই সম্মেলনে অংশ নেবেন কিনা এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। সবকিছু বিবেচনা করেই তার সফরটি চূড়ান্ত হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।