DMCA.com Protection Status
title="৭

বিব্রতকর মন্তব্যের কারনে ভারত সফরে যেতে পারলেন না আব্দুল মোমেন!!!

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এই প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ছাড়াই পররাষ্ট্র সফলে গেলেন মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এই সফর সঙ্গীর তালিকায় ছিলেন আব্দুল মোমেন, নিয়েছিলেন সফরের প্রস্তুতিও। সফরের আগের দিন বিকালে বসলেন সংবাদ সম্মেলনেও। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। জানান তিনি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন।

কিন্তু সোমবার সকালে দিল্লির উদ্দেশ্যে উড়াল দেয়া বিমানে আর চড়া হয়নি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের। তাকে ছাড়াই প্রতিনিধিদল নিয়ে ভারত সফরে গেছেন মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরসঙ্গীর তালিকায় থাকলেও শেষ মুহূর্তে কেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি গেলেন না- এ নিয়ে নানা আলোচনা চারদিকে। নানা প্রশ্ন মুখে মুখে। প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গী হন এটাই রেওয়াজ।

প্রতিবেশী দেশ ভারত সফরের মতো গুরুত্বপূর্ণ সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুপস্থিতি বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। মন্ত্রী মোমেন কেন সফরে যাননি এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক দেয়া তার কিছু বক্তব্যের জেরেই সফর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র যদিও বলছে, তিনি শারীরিকভাবে সমস্যায় ভুগছেন বলে সফরে যেতে পারেননি। ‘মন্ত্রী অসুস্থ’ মন্ত্রণালয়ের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কিছু অবশ্য বলা হয়নি। এটি ‘ডিপ্লোম্যাটিক ইলনেস’ কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ।

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর তালিকায় মন্ত্রী মোমেন এবং তার স্ত্রীর নামও ছিল। তার দিল্লি যাওয়ার প্রস্তুতিও ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। তাকে ছাড়াই দিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেহেতু সফরসঙ্গীর তালিকায় নাম ছিল তাই সফর শুরুর আগেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী যাচ্ছেন না এমন বার্তাও পাঠানো হয় দিল্লিতে।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের দেয়া বক্তব্য বাংলাদেশ এবং ভারতে অস্বস্তির পরিস্থিতি তৈরি করে বলে অনেকে মনে করছেন। মন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার তা করতে ভারত সরকারকে তিনি অনুরোধ করে এসেছেন। মন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রচারের পরই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। দল এবং সরকারকে বিব্রত করে। ভারতের তরফে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়া না হলেও কূটনৈতিক সূত্রের দাবি মন্ত্রী মোমেনের ওই বক্তব্য ভারত সরকারের জন্যও বিব্রতকর ছিল। এর আগে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি বক্তব্য হিন্দু সমপ্রদায়কে ক্ষুব্ধ করেছিল। তার ওই বক্তব্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারাও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখান। এমন অবস্থায় সতর্কতার অংশ হিসেবেই মন্ত্রী মোমেন সফর থেকে বাদ পড়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

একেবারে শেষ মুহূর্তে তাকে সফর তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে- এমনটাও মানতে নারাজ কেউ কেউ। সফরের আগের দিন বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের যে সিট পরিকল্পনা পাওয়া যায় সেখানে মন্ত্রী মোমেনের জন্য কোনো সিট বরাদ্দ ছিল না বলে দাবি করছে কোনো কোনো সূত্র।

গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাদ পড়ার বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন। উত্তরে তিনি বলেন, যেকোনো কারণেই হোক, উনি যেতে পারেননি। তবে কেন তিনি যেতে পারেননি, বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন।

কলকাতার দৈনিক ‘এই সময়’ এক রিপোর্টে জানায়, ড. মোমেন ভারতে যাবেন না এমন সিদ্ধান্ত রোববার রাতেই নেয়া হয়। বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরে দিল্লিকে জানানো হয়। সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী না গেলেও মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে দিল্লিতে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর চার দিনের এই ভারত সফরে মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!