ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃমিডনাইট হাসিনা সরকারের সহযোগী বিরোধীদল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন,এই সরকার নিজের ওপর থেকেই আস্থা হারিয়েছে। তাই তারা স্বাভাবিক নির্বাচন চায় না। সরকার ও তাদের কিছু মিত্র ছাড়া আর সকল দলই নির্বাচনে ইভিএম চায় না। ইভিএম হচ্ছে শান্তিপূর্ণ কারচুপির মেশিন। রোববার বিকেলে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করেই ইভিএম -এ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলেছে, সকল দল চাইলে ব্যালটে নির্বাচন হবে। আসলে নির্বাচন কমিশনের বলা উচিৎ ছিলো সবাই চাইলে ইভিএম -এ নির্বাচন করা হবে। কারণ, ব্যালট পেপারে নির্বাচন বিদ্যমান এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। নির্বাচন কমিশন ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করবে এই বিষয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, উদ্দেশ্য ভালো না হলে কোন কিছুই ভালো হবে না। সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করতে হবে।
চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাপা চেয়ারম্যান আরো বলেন, নির্বাচন অবাধ ও গ্রহণযোগ্য না হলে সংঘাত আরো বাড়বে।
কারণ, আগামী নির্বাচন হবে অস্তিত্বের লড়াই। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন একটি জায়গায় নেয়া হয়েছে, সবাই প্রতিপক্ষকে শত্রু মনে করছে। সবাই মনে করছে পরাজিত হলে তাকে হত্যা করা হবে, যে পরাজিত হবে সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আসলে এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমরা চাই না। আমরা চাই সবাই যার যার রাজনীতি করবে। আবার সবার সাথে সবার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে সবাই একসঙ্গে কাজ করবে। আমরা চাই, সরকার সবাইকে ডেকে অথবা গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। অসহিষ্ণু রাজনীতি কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।
জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ ভালো নেই। অর্থনৈতিক সমস্যায় সীমাহীন কষ্টে আছে সাধারণ মানুষ। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। আমাদের দেশেও জ্বালানি তেলের দাম কমানো উচিৎ। আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে যে সকল পণ্যের দাম বেড়েছে সেগুলো কমাতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। অনেকের বেতন কমানো হয়েছে। এমন বাস্তবতায় প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ হিমশিম অবস্থায় দিন পার করছেন। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কটে অনেক দেশই সাধারণ মানুষের সেবায় কল্যাণমুখী অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মানুষের কষ্ট দূর করতে অনেকভাবেই সাহায্য করেছে বিভিন্ন দেশের সরকার। কিন্তু এমন বাস্তবতায় মানুষের কল্যাণে আমাদের সরকারের কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনা। যেটুকু বরাদ্দ দেয়া হয় তাও দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেনা। মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন হলে মেগা প্রকল্পগুলো বন্ধ রাখা উচিৎ।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র, সরকার ও সরকারি দল এখন এক করে ফেলা হয়েছে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে আমরা সরকারের সমালোচনা করবো, এটা আমাদের কর্তব্য। তাই সরকারের সমালোচনা করলে, রাষ্ট্র-বিরোধী মনে করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্র-বিরোধী মামলা দেয়া হয়।
জাতীয় মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট পরিষদের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বাবু’র সভাতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক প্রিয়াংকা সকুল-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ শফি প্রমুখ।