ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার পরেও নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডারদের পদোন্নতিসহ নানাভাবে পুরস্কৃত করছে বাংলাদেশ সরকার।
বুধবার মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। এতে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি লিখেছেন, জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতনসহ নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত এসব নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা। কিন্তু তাদের অপরাধের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করে উল্টো তাদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, গত ৩০শে সেপ্টেম্বর পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। সেসময় র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে ঘটনার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তাকে পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, এতদিন এ দায়িত্বে থাকা ড. বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, তিনি র্যাবের মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় তার অধীনে থাকা কর্মকর্তারা মোট ১৩৬ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ১০টি গুমের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সফরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বাংলাদেশ সরকার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে পাঠানো প্রতিনিধি দলের সদস্য করে তাকে।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের তরফ থেকে র্যাবকে সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিষয়ে আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, আমরা এমন কিছু করছি না যে জন্য আমাদের র্যাবকে সংস্কার করতে হবে। তাই সংস্কারের কোনো প্রশ্নই নেই। এ বছরের প্রথমে আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা র্যাবের আরেক কর্মকর্তা এডিজি কর্লেন খান মোহাম্মদ আজাদকে তাদের সাহসিকতা ও সেবার জন্য পুরস্কৃত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, এমন পদক্ষেপ বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর কাছে এই বার্তা দেয় যে, সরকার শুধু তাদের বিরুদ্ধে থাকা অপব্যবহারের অভিযোগগুলো উপেক্ষাই করবে না, বরং তাদেরকে আরও পুরস্কৃত করবে।