ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গাজীপুর জেলা বিএনপির শান্তিপূর্ণ শোকর্যালিতে পুলিশের হামলা, লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলিতে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে।
আজ সোমবার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর রাজবাড়ি রোডস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে শোকর্যালি বের করা হলে পুলিশ বাধা দেয় এবং শোকর্যালির ব্যানার টেনে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সামনে এগুতে চাইলে পুলিশ এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ করে। এতে নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাগে ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশও নেতাকর্মীদের পিছু হটাতে টিয়ারশেল ও শর্টগানে গুলি নিক্ষেপ করে। এতে যুবদল নেতা জাকির, মারুফ, মাসুম, মাজহারুল, নাজির, আরিফ গুলিবিদ্ধ এবং যুবদল নেতা ইব্রাহিম ও ছাত্রদল নেতা ফাহিম মোস্তাফিজ, এড. নাজমুল হোসেন, এড. সাইফুল মোল্লাসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় যুবদল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ১২ জনকে আটক করে।
শোকর্যালি বের করার আগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পথসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়া জুল হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপি নেতা হুমায়ূন কবির খান, আজিজুর রহমান পেরা, ভিপি হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়। কয়েক গজ যেতেই পুলিশ বাধা দেয় এবং মিছিলের ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এসময় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সামনে এগুতে চাইলে পুলিশ এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ করে। এতে নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাগে ছত্রভঙ্গ হতে থাকে। পুলিশও নেতাকর্মীদের পিছু হটাতে টিয়ারশেল ও শর্টগানের বোমাবর্ষণ করে।
জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেন, বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে নিহত নেতাকর্মীদের স্মরণে শোকর্যালির কর্মসূচি ছিল। জেলা বিএনপি একটি শোকর্যালির আয়োজন করে। শান্তিপূর্ণ এই শোকর্যালিটি দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে কয়েক গজ সামনে এগুতেই পুলিশ বাধা দেয় এবং আমাদের শোকর্যালির ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এসময় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা সামনে এগুতে চাইলে পুলিশ বিক্ষিপ্তভাবে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ নেতাকর্মীদের লক্ষ করে শর্টগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের যুবদল ও ছাত্রদলের ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এসময় গাজীপুর সদর মেট্রো আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি রাজামিয়া ও তার লোকজনের সহায়তায় পুলিশ আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ের ১২ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহাম্মেদ জানান, বিএনপি অনুষ্ঠান শেষ করে একটি মিছিল সহকারে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করে। এসময় আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করি। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোসদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হাসান জানান, বিএনপি কর্মীদের ছোড়া ইটপাটকেলে পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছে। তবে তিনি আহতদের নাম বলতে পারেননি।