ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে নোম্যান্সল্যান্ডে অভিযান চালাতে গিয়ে মাদক কারবারিদের গুলিতে গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তা ও এক রোহিঙ্গা নারী নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন র্যাবের ১ সদস্যসহ আরো তিন রোহিঙ্গা। গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গা শিবিরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই সীমান্তের উভয় দিকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি টহল বাড়িয়েছে। জিরো লাইনে থাকার রোহিঙ্গা শিবিরের কাউকেই এখন বাইরে আসতে দেয়া হচ্ছে না। বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহতরা হলেন-অভিযানে থাকা ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার মো. রেজওয়ান (৩৪) ও রোহিঙ্গা শিবিরের নারী সাজেদা বেগম (২০)। আহতদের মধ্যে র্যাব সদস্য সোহেল বড়ুয়ার (২৭) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তির পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অবস্থান করছে। সেখানেই রোহিঙ্গা মাদক কারবারিদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গোয়েন্দা সংস্থার খবরের ভিত্তিতে মাদক অভিযানে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনাবশত একজন অফিসার সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি কীভাবে গুলিবিদ্ধ হলেন এবং কোন মাদক কারবারিরা তাকে গুলি ছুড়লো, এসব বিষয়সহ সবগুলো বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ ঘটনার সত্য উদঘাটন করে আমরা পরে জানাবো। যখন এ ধরনের অভিযানে যাওয়া হয় তখন গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান হয়ে থাকে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
গতকাল আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, র্যাব ও ডিজিএফআই এর মাদক বিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনার সময় সোমবার মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের সাথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বান্দরবন জেলার তমব্রু সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ হয়। মাদক চোরাচালানকারীদের সাথে এই সংঘর্ষ চলাকালে মাদক চোরাচালানকারীদের গুলিতে দায়িত্বরত অবস্থায় ডিজিএফআই এর একজন কর্মকর্তা (বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা) দেশের জন্য আত্মত্যাগ করে শহীদ হন এবং র্যাবের একজন সদস্য আহত হন।
মো: সাদাত উল্লাহ, বান্দরবান থেকে জানান, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাদক পাচারকারীদের একটি চক্র তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা শিবের অবস্থান করছে এ খবর পেয়ে সেখানে রাত ৮ টার দিকে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় রোহিঙ্গা শিবির থেকে মো. জামাল নামের এক পাচারকারীকে আটক করা হয়। ঘটনার পরেই অভিযানকারী র্যাবের দলটির উপর গুলি বর্ষণ শুরু করে মাদক পাচারকারীরা। এতে ঘটনাস্থলে অভিযানকারী দলটিতে থাকা ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা বিমান বাহিনীতে কর্মরত স্কোয়াড্রন লিডার মো. রেজওয়ান নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রোহিঙ্গা শিবিরের নারী সাজেদা বেগম। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আরো তিনজন রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা আহত হয়।