ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে ‘চরম সত্য কথাটি’ বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাপানি দূত ইতো নাওকির মন্তব্য ও তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘আপনি যখন দূর্বল থাকেন, আপনার যখন পায়ের নিচে মাটি থাকে না, তখন আপনি এই ধরনের কথা বলবেন। এটার বাস্তবতাটা এটাই যে, জাপানি রাষ্ট্রদূত যেকথা বলেছেন, চরম সত্য কথাটি বলেছেন।”
‘‘ভিয়েনা কনভেশন আপনারা এখন দেখেন। যখন আপনারা এভাবে মানুষ হত্যা করেন, যখন আপনার গুম করে দেন, খুন করে দেন, দিনের ভোট রাতে করেন, ভোট না করে নিজেদেরকে সরকার ঘোষণা করে দেন তখন কোথায় থাকে ভিয়েনা কনভেনশন? বিষয়টা তো ওই জায়গায়।”
গত সোমবার ঢাকায় সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ(সিজিএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইতো নাওকি বলেন, ‘‘আমি শুনেছি পুলিশ কর্মকর্তারা আগের রাতে ব্যালট বক্স ভর্তি করেছেন। অন্য কোনো দেশে এমন দৃ্ষ্টান্তের কথা শুনিনি। এভাবে ব্যালট বাক্স ভর্তির ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে। এখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার, এটাই আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি।”
এরকম মন্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে জাপানের দূতকে তলব করার কথা জানিয়ে গতকাল বুধবার নিজের ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের অ্যাম্বাসেডরকে ডেকেছিলাম। তাকে যা যা বলা দরকার, আমরা বলেছি।’’
রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ঠিক কী বলা হয়েছে, ফেইসবুক পোস্টে তার বিস্তারিত বলেননি প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তবে ভিয়েনা কনভেনশনের একটি ধারা ফেইসবুক পোস্টে তুলে ধরে ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বিষয়’ কূটনীতিকদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
‘‘যদি আপনাদের কেউ ভুলে গিয়ে থাকেন : ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেশনের ৪১ ধারার অনুচ্ছেদ ১ কূটনীতিবিদদের গ্রহণকারী দেশের আইন ও বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয় এবং ওই জাতির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িত হওয়া থেকে সুস্পষ্টভাবে বিরত থাকতে বলে।”
আন্তর্জাতিক মহলের চোখ খুলেছেঃ
সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আসলে ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি তাদের চোখ খুলেছে। তারা এখন দেখতে পাচ্ছে যে, বাংলাদেশে কিছু হচ্ছে। বাংলাদেশ তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। স্পার্টেড পারসেল অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল গ্লোভাল কমিউনিটি- গোটা বিশ্বের একটা অংশ। এখানে ইচ্ছা করলেই.. এখন আর সেই দুনিয়া নেই যে ইচ্ছা করলেই যা খুশি করে যেতে পারে কেউ কিছু বলতে পারবে না। বলবেই তো মানুষ।”
‘‘এটা(বাংলাদেশ) তো কোনো ক্লোজড কাউন্ট্রি না। লাইক মিয়ানমার অর নর্থ কোরিয়া? তাতে না। এটা তো আপনার মোটামুটি একটা ওপেন কান্ট্রি। এখানে যারা পাটানার শীপ আছে, এখানে যারা ইনভেস্ট করে, এখানে যারা টাকা পয়সা দেয়, যারা এখানে উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত, তারা তো তাদের কথা বলবেই।”
সরকার ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বিএনপি আন্তর্জাতিক মহলগুলোকে প্রভাবিত করছেন- এরকম প্রশ্ন করলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘তাহলে কি বুঝতে হবে? এটাই বুঝতে হবে আমরা এখন জনগনকে সঙ্গে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। তাই না।”
‘‘ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি এখন আপনার সেদিকে চোখ দিতে বাধ্য হচ্ছে।”