ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দেশের বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ খাতওয়ারি মিডনাইট হাসিনা সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের স্বজনদের ব্যক্তিগত দুর্নীতিও সামনে আনবে দলটি।
গত সোমবার জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, গত ১৪ বছরে দুর্নীতি, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দেশের মানববাধিকার ও গণতান্ত্রিক অবস্থা সামনে আনা হবে। ক্ষমতাসীন দলের কোন নেতা কী দুর্নীতি করেছে, কার কত সম্পদ ছিল এবং এখন কত সম্পদ আছে তা লিফলেট আকারেও তুলে ধরা হবে।
সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে তাদের দলীয় নেতাদের আত্মীয়-স্বজনের দুর্নীতির প্রমাণ জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। এছাড়াও সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দুর্নীতিও সামনে আনা হবে।
কার কত সম্পদ বেড়েছে, কে কত টাকা বিদেশে পাচার করেছে ইত্যাদি বিএনপি জাতির সামনে তুলে ধরবে। এজন্য বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা ও সাবেক আমলা কাজও শুরু করেছেন।
এদিকে যমুনা নদীকে সংকুচিত করার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মনে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির ওই ভার্চুয়াল সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পবিত্র রমজান শুরুর সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগের বছরগুলোর মতো এবারও এতিম ও আলেম-ওলামা, পেশাজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্থায়ী কমিটির এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, সভায় সম্প্রতি যমুনা নদীকে সংকুচিত করার একটি ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রকল্প গ্রহণ করা নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে এই প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রকৃতি, জনগণের জীবিকা, জলবায়ুর মারাত্মক ক্ষতি করবে। এই ধরনের আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানানো হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন- জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১১ মার্চ বিএনপি ঘোষিত দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় কয়েকটি জেলায় আকস্মিক ন্যক্কারজনক হামলা চালায়।
মৌলভীবাজারে মানববন্ধন কর্মসূচির শুরুতেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের মদদে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপরে সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নেতা নাছের রহমানসহ প্রায় ২৫ জন গুরুতর আহত হন। নাছের রহমানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিনা কারণে এ হামলা ন্যক্কারজনক।
সভায় এ হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
Advertisement