ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এবার সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানকে তেহরানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ সাত বছর পর সম্পর্ক স্থাপনের পর উভয় পক্ষ থেকেই একের পর এক ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে রমজানের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে সরাসরি বৈঠক আয়োজিত হয়েছে। এছাড়া এর আগে সৌদি বাদশাহ ইরানের প্রেসিডেন্টকে রিয়াদে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এখন সৌদি বাদশাহকে ইরান সফরের আমন্ত্রণ জানাল তেহরান।
জিও টিভি জানিয়েছে, ইরানের ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি এই আমন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সৌদির বাদশাহকে তেহরান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এছাড়া আগামী ৯ মের মধ্যে দুই দেশ একে অপরের রাজধানীতে কূটনৈতিক মিশন চালু করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। ইরানি মুসল্লিরা যাতে এবারের পবিত্র হজে অংশ নিতে পারেন, সে জন্য উভয় দেশ সময়মতো দূতাবাসগুলো সক্রিয় করার ওপর জোর দিচ্ছে। এরইমধ্যে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দূতাবাস ও কনস্যুলেট পরিদর্শন করেছেন।
এর আগে অনেকটা নিবিড়েই এগিয়ে চলে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যেকার সম্পর্ক স্থাপনের আলোচনা। গত ৯ই মার্চ দুই দেশ সম্মত হয় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করতে।
বিষয়টি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে গত ৬ই এপ্রিল ইরান ও সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বেইজিংয়ে বৈঠক করেন। দূতাবাস পুনরায় চালুর আগে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আবারও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। আর এই পুরো বিষয়টি হয়েছে চীনের মধ্যস্ততায়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি যে যুক্তরাষ্ট্রকে ছেড়ে ক্রমশ চীনের দিকে ঝুঁকছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় বেইজিং-এর এই সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টায়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালে শিয়া সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি আরব। এ ঘটনার প্রতিবাদে ইরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে হামলা হয়। এর জেরে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছেদ করে সৌদি আরব। ইরান ও সৌদির এই দ্বন্দ্ব গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বিভাজন সৃষ্টি করে। ইয়েমেন ও সিরিয়ার যুদ্ধে সরাসরি প্রভাব রয়েছে এই দ্বন্দ্বের। অবশেষে সাত বছরের মাথায় দুই দেশ সম্পর্ক জোড়া লাগাতে সম্মত হয়। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বহু বছর পর শান্তি ফিরে আসবে সেই আশা করা হচ্ছে।