ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু চালু হয়েছে মাস দশেক আগেই। এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তবে পদ্মা সেতু প্রকল্প এখনো চলমান। নদীশাসনের কাজ শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে এক বছর মেয়াদসহ ২ হাজার ৪১২ কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে। এতে প্রকল্পটির মূল ব্যয় ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। গতকাল পদ্মা সেতু প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনীতে এই ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি- একনেক। পদ্মা সেতু প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধিত ব্যয় ছিল ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
একনেক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময় ভ্যাট ও আয়করের হার বাড়ায় সেতু ও নদীশাসন কাজের পরামর্শক ব্যয় বেড়েছে। সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ বেড়েছে। মূল সেতুর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং আনুষঙ্গিক সিভিল কাজের জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে হয়েছে।
সেতুটির শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে ব্যয় হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার মান বেড়েছে, মূল সেতু ও নদীশাসন কাজের ঠিকাদারদের টাকা আটকে আছে, মূল সেতুর পাইলের ডিজাইন পরিবর্তন হয়েছে। এসব কারণে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে একনেক বৈঠকে ১৯ হাজার ৫৯৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ২৬০ কোটি ৭২ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ১৩ হাজার ২০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৩৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হলো- কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রিনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিল্যান্স ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘বিল্ডিং ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট লাইভলিহুড ইন দ্য ভালনারেবল ল্যান্ডস্ক্যাপস ইন বাংলাদেশ (বিসিআরএল)’ প্রকল্প। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি এবং চরমোনাই এলাকা কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন হতে রক্ষা’ প্রকল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘ইমপ্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রজেক্ট’। এছাড়াও ‘সেফার সাইবারস্পেস ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ: ইনহ্যান্সিং ন্যাশনাল অ্যান্ড রিজিওনাল ডিজিটাল ইনভেস্টিগেশন ক্যাপাসিটি অব বাংলাদেশ পুলিশ’ এবং ‘ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুননির্মাণ’- প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ’ এবং ‘বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা’ প্রকল্প, ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরাল একটি ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ’ ও ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন’Ñ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। পাশাপাশি ‘জি টু জি ভিত্তিতে ২টি ক্রুড অয়েল মাদার ট্যাংকার এবং ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহ’ প্রকল্পও অনুমোদন দেয়া হয়েছে