ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আগামী নির্বাচন নিয়ে মিডনাইট হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা একটা স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন করবো; অন্য দেশ কী ভাবলো তাতে আমাদের যায়-আসে না। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক সম্মেলন-২০২৩ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, দেশে কর্মসংস্থান, জলবায়ু, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচনও একটি চ্যালেঞ্জ। ইউরোপের কোনো দেশে ৩০ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয় না। আর আমেরিকাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়া ২৬ শতাংশের বেশি লোক ভোট দিয়েছে এমন নজির খুব কম। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনে ৭২ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয়।
আমাদের দেশে যারা ভোট দিতে চায়, তারা ভোট দিতে পারে। শেখ হাসিনার সরকার অঙ্গীকার করেছে, দেশে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন করার। এটি করতে যা যা দরকার তা আমরা করেছি। ভুয়া ভোট যাতে না হয় তার জন্য ছবিসহ ভোটার তালিকা করেছি, বায়োমেট্রিক সুবিধা করেছি।
স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তবে স্বচ্ছ, সুন্দর নির্বাচনের জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সব দলের কমিটমেন্ট থাকতে হবে যে, আমি একটা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করবো। এটা সবাই নিশ্চিত করতে পারলেই একটি স্বচ্ছ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।
বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ৩০ লাখ লোক প্রাণ দিয়েছি। অন্যদের কাছ থেকে আমাদের শেখার কিছু নেই। বরং অন্যরা আমাদের থেকে শিক্ষা নেবে। কিছু দুষ্টু লোক ক্ষমতায় ছিল, যারা আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তারা এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করে, ইয়েস-নো ভোট করে আমাদের নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।
আওয়ামী লীগ সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে- মন্তব্য করে আবদুল মোমেন বলেন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের বলিষ্ঠ প্রচেষ্টা রয়েছে। আর যদি কেউ অন্য দেশের কথা বলে, তাহলে তাদের ওই দেশের নাগরিকত্ব দিয়ে দেয়ার কথাও বলেন মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সদ্য সমাপ্ত সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করেন। সে সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এবং তার পরিবার শেখ হাসিনাকে ডেভেলপমেন্ট প্রাইম মিনিস্টার হিসেবে অনেক দিন ধরে অনুসরণ করছেন। এটি সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগের গত ১৪ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রার জন্য।
ওয়াশিংটনে বিক্ষোভের বিষয় নাকচ করলেন মোমেন: এদিকে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের সময় ওয়াশিংটনে বিরোধী দলের বিক্ষোভের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুুল মোমেন। কোনো বিক্ষোভকারীকে খুঁজে পাননি দাবি করে বলেন, এটা ফেসবুকের কারসাজি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ওয়াশিংটনে পৌঁছাই সেখানে কোনো বিক্ষোভকারী খুঁজে পাইনি। এমনকি লন্ডনে থাকা অবস্থায় কোনো বিক্ষোভকারীকে দেখতে পাইনি। এগুলো ফেসবুকেই দেখি। ঘরে বসে বানায়। যার কোনো সত্যতা নেই।
তিনি বলেন, আমি হোটেল থেকে বের হয়ে বহু খুঁজেছি, একটা লোককে পাই কি না। একজন বিরোধী দলের লোক পেলে তাকে জিজ্ঞেস করব, আপনারা এত অসন্তুষ্ট কেন? অথচ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন লাইন ধরে ছিল। এসময় বিদেশিদের সঙ্গে সরকারের কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ হলো গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সূতিকাগার। আওয়ামী লীগ সবসময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমি প্রায়ই বলি, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন চাইলেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারবে না।
সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফরে সরকারের পক্ষ থেকে সেই দেশগুলোর প্রতিনিধিদের দেয়া বার্তা প্রসঙ্গে মোমেন জানান, আমরা সবাইকে বলেছি, আপনাদের যদি কারো ওপর বিশেষ দাবি দাওয়া বা বিশেষ নজর থাকে তাহলে বক্তব্যটা জানাবেন। এছাড়া যত কথাই বলি কোনো লাভ নেই। আমাদের অন্যদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন নেই। বরং অন্যরা আমাদের থেকে শিখতে পারে।