ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও সৌদি আরবসহ ছয়টি দেশের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া বাড়তি প্রটোকল সুবিধা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ইতিমধ্যেই দূতাবাসগুলোকে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ সোমবার (১৫ মে) এসব তথ্য এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেনও এমন তথ্য জানান।
ফারুক হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতরা বাসাবাড়ি এবং অফিসের নিয়মিত প্রটোকল পাবেন। তবে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো সুবিধা তারা পাবেন না। ’
এই অতিরিক্ত সুবিধা সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতরা কোথায় যাওয়ার সময় তাদের গাড়ির বহরের সামনে ও পিছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি এবং ফোর্স থাকত। এই সুবিধা এখন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। কারণ, আমাদের এখন পুলিশ বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। পরবর্তীতে সেটি সুবিধা জনক সময়ে পূর্বের প্রটোকল দেওয়া হবে।’
ছয়টি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের নিরাপত্তা প্রটোকল প্রত্যাহারে সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা প্রটোকল সুবিধাই বাতিল করেছি, বিষয়টি এমন নয়। আরও যেসব দেশের রাষ্ট্রদূতগণ এ সুবিধা চেয়ে আমাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তাদেরকেও এমন সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে অপারগতা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
নিরাপত্তা প্রটোকল সুবিধা বাতিলের কারণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে এমন সুবিধা দেওয়া হয় না। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে আমাদের রাষ্ট্রদূতগণ তো দূরের কথা, আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তিও উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে গেলে এমন সুবিধা দেওয়া হয় না। আমরা এখন উন্নয়নের দিক থেকে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর পর্যায়ে পৌঁছতে কাজ করছি। ফলে, উন্নত রাষ্ট্রগুলো যে পদ্ধতি অনুসরণ করছে আমরাও সেই পদ্ধতি অনুসরণ করছি। তা ছাড়া আমাদের দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেক উন্নত হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা নেই বলেই আমরা মনে করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও সৌদি আরবসহ ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমাদের দেশে নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়া হতো। এখন ক্রমান্বয়ে আরও হাফ ডজন দেশ একই সুবিধা চেয়েছে। ফলে, এটা আমাদের পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া এখন আমাদের নিরাপত্তা সদস্যদের পদ্মা সেতুসহ আরও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিয়োজিত করতে হচ্ছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন জানান, আমরা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বেতন-ভাতা দিয়ে থাকি। তাদেরকে আমাদের জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত করতে হবে। কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত যদি দেশের কোথাও যাতায়াতের জন্য আলাদা নিরাপত্তা প্রটোকল নিতে চান, তাহলে তাদের জন্য নির্দিষ্ট হারে অর্থ পরিশোধ সাপেক্ষে সে প্রটোকলের ব্যবস্থাও থাকবে।