DMCA.com Protection Status
title="৭

বাংলাদেশে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালোঃশাহরিয়ার আলম

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাংলাদেশের মিডনাইট হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, অন্য অনেক দেশের তুলনায় ‘অনেক ভালো ও দক্ষ উপায়ে’ সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমাদের সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে নিরাপত্তা দিয়ে আসছে এবং দক্ষতার সঙ্গে নিরাপত্তা দেওয়া অব্যাহত রাখবে”।

তিনি আরও জানান, সরকার এই বিষয়ে অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং তাদের হাতে আরও অনেক কাজ রয়েছে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, “(এ বিষয়ে) আমরা অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছি”।

যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বর্তমানে বিশেষ শাখা থেকে দুজন গানম্যানসহ ১৫৮ জন নিরাপত্তা কর্মী পরিষেবা পাচ্ছে।

এর মধ্যে প্রত্যেক দূতাবাস, বাসভবন ও অন্য প্রতিষ্ঠানে ৩৯ জন করে নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে এবং এগুলোর মোট সংখ্যা ১১৭ জন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অন্য কূটনীতিকদের বাসভবনের জন্য আরও ২৯ জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এসকর্ট হিসেবে ব্যবহার করা অতিরিক্ত ৮ জন কর্মীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে বর্তমানে ২৯ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং দুজন গানম্যান রয়েছে এবং ৭ জন অতিরিক্ত কর্মীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতের হাইকমিশন ৪০ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং ঢাকায় সৌদি দূতাবাস ৪৮ জন নিরাপত্তা কর্মী পায়।

এর আগে বুধবার (১৭ মে) বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বা রবিবার ঢাকায় কূটনৈতিক মিশনের জন্য আনসাররা যে বিকল্প নিরাপত্তা পরিষেবা সরবরাহ করতে পারে, সে বিষয়ে সরকার জানাবে।

বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তারা (আনসার) তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছে। আমরা এক ধরনের ধারণা পেয়েছি, সেই তথ্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় আমরা বিদেশি মিশনে জানিয়ে দেব”।

মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, আগামীকালের মধ্যে সম্ভব না হলে রবিবার (২১ মে) একটি নোট মৌখিকভাবে মিশনগুলোকে জানাবেন তারা।

আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এ কে এম আমিনুল হক বলেছেন, আনসার ব্যাটালিয়ন অবিলম্বে রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রটোকল দিতে প্রস্তুত।

আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ইতিমধ্যে সংসদ সদস্যসহ সারা দেশে এ ধরনের প্রটোকল দায়িত্ব পালন করছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ মে) মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, সরকার চার কূটনীতিকের জন্য ‘অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট’ প্রত্যাহার করায় বিকল্প হিসেবে ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোতে আধাসামরিক সহায়ক বাহিনী আনসারের পরিষেবাগুলোর প্রস্তাব করবে।

মাসুদ বিন মোমেন বুধবার তারা (আনসার বাহিনী) কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে পারবে এবং এই সেবা নিতে ইচ্ছুক মিশনগুলোর সঙ্গে কীভাবে সংযোগ গড়ে তুলতে পারেন সে বিষয়ে আনসার মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সরকার ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে আয়োজক দেশ হিসেবে দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এবং বিদেশি মিশন ও তাদের কর্মীদের নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ১৫ মে (যুক্তরাষ্ট্র সময়) স্টেট ডিপার্টমেন্টে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে, এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “আমি যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিশদ বিবরণে প্রবেশ করতে যাচ্ছি না”। তিনি উল্লেখ করেন, “কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যেকোনো স্বাগতিক দেশকে, অবশ্যই সকল কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ এবং কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে হবে এবং কর্মীদের ওপর যেকোনো আক্রমণ প্রতিরোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে”।

এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার (১৫ মে) বলেছিলেন, ৫ থেকে ৬ জন কূটনীতিক এ ধরনের সেবা পেয়ে থাকেন এবং এখন অন্য কূটনীতিকরাও এই সুবিধা চান।

তিনি বলেন, “এটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে”।

আব্দুল মোমেন আরও বলেন, “তারা চাইলে অর্থের বিনিময়ে পেতে পারে। আমরা করদাতাদের অর্থ দিয়ে এই অতিরিক্ত (নিরাপত্তা) এসকর্ট পরিষেবা প্রদান করব না”।

আব্দুল মোমেন বলেন, “উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেয় না”। তিনি আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে, এ ধরনের সেবা প্রয়োজন”।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বা বাংলাদেশে নিয়োজিত বিদেশি কুটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য আমাদের নজরে এসেছে।

উল্লেখ্য যে, প্রতিটি দূতাবাসে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছেন এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশ প্রদত্ত গানম্যান নিয়োজিত আছেন। এই কারণে নিরাপত্তা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এই বিভ্রান্তিকর খবরটি সঠিক নয়।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!