DMCA.com Protection Status
title="৭

বিএনপির সাথে সংলাপ বিষয়ে আমুর বক্তব্য তার ব্যক্তিগত-দলের বা সরকারের নয়ঃ হাছান মাহমুদ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মিডনাইট হাসিনা সরকারের তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত। এটি হাসিনা সরকার বা আওয়ামী লীগ অথবা ১৪ দলের বক্তব্য নয়।’

বুধবার (৭ জুন) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা আমির হোসেন আমুর বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ১৪ দলীয় জোটের সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় রাজি আছে, প্রয়োজনে জাতিসংঘের মধ্যস্থতাতেও হতে পারে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। এ নিয়ে আমাদের দল, সরকার ও ১৪ দলের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি। তবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে, তিনি ঠিক সেভাবে বলেননি।’

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেভাবে ভারতে নির্বাচনকালীন চলতি সরকার দায়িত্ব পালন করে, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য পালন করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও পদত্যাগ করেন না, তিনিও নির্বাচনকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন; যেভাবে সব গণতান্ত্রিক দেশে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে, ঠিক সেভাবে আমাদের দেশেও বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সরকারের আকার কী হবে, সেটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আয়োজন ও ব্যবস্থাপনাতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে চায়, তাদের অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনকে আমাদের সরকার সর্বোতভাবে সহায়তা করবে, যাতে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক, উৎসবমুখর একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা চাই সে নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক এবং অত্যন্ত চমৎকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। বিশ্বের কাছে উদাহরণ হিসেবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, সেটিই আমরা চাই। নির্বাচন নিয়ে যদি কোনও প্রসঙ্গ থাকে বিএনপিকে সেটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কারণ, নির্বাচন আয়োজন অনুষ্ঠান করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের ডাকে, আমরাও যাবো।’

বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে, ৫০০ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে, দুজন প্রিসাইডিং অফিসারকে হত্যা করেছে এবং সাড়ে ৩ হাজার মানুষ পুড়িয়েছে। তার মধ্যে ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। তারা আসলে নির্বাচন প্রতিহত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং তা মির্জা ফখরুল সাহেব আবার বলেছেন। কিন্তু এবার আর তাদের পক্ষে নির্বাচন প্রতিহত করা কিংবা নির্বাচন বর্জন করা সম্ভব হবে না। বিভিন্ন সময় তারা এরকম অনুযোগ বিদেশিদের কাছে করে এসেছে। এবার সেটি সম্ভব হবে না। দেশে অবশ্যই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে সিদ্ধান্ত নিতেই পারে নির্বাচন করবে কি করবে না। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য তা নয়, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন ভণ্ডুল করে দেশে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা। কিন্তু নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ হচ্ছে মুখ্য বিষয়। জনগণ যদি ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় এবং ভোট অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয়, তাহলে সেটি একটি ভালো নির্বাচন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল। কানাডার আদালত কর্তৃক রায়প্রাপ্ত ভ্যালিডেটেড সন্ত্রাসী অর্থাৎ সিলমারা সন্ত্রাসী দল, যারা মানুষ পোড়ায়, গাড়িঘোড়া পোড়ায়, পুলিশের ওপর হামলা চালায়, মানুষের ওপর হামলা চালায়, যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা চালায়; তাদের হামলায় এস এম কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, খুলনার মনজুর ইমামসহ অনেকেই নিহত হয়েছেন। তাদের হামলায় আমাদের শেখ হেলাল এমপির জনসভায় অনেক মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে, আদালতের বিচারক নিহত হয়েছে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় ছেলের মৃত্যুর পর তার প্রতি সহানুভূতি জানাতে দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে তার দরজায় আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও যারা দরজা খোলেনি, যারা অগ্নিসন্ত্রাস চালায়, মানুষের ওপর হামলা চালায়, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কী হবে, সেটি হচ্ছে বড় প্রশ্ন।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!