ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের জনগণ কখনোই কোনও বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘দেশি-বিদেশি চাপ যতই আসুক না কেন, বাঙালিরা কখনোই সেই চাপের কাছে মাথা নত করবে না।’
বুধবার (৭ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, এ দেশ আমাদের। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না ‘
আওয়ামী লীগ সংগ্রামের মাধ্যমে এই দেশে গণতন্ত্র এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ এগিয়েছে। আমরাই আমাদের দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করবো।’
ছয়-দফা ছিল বাংলাদেশের জনগণের ‘মুক্তির সনদ’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর (ছয় দফা) মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আমরা রোল মডেল হিসেবেই এগিয়ে যাবো।’
তিনি দেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে আর কেউ দমন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নয়ন হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’ এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সচেতন হতে এবং দেশের মানুষের পাশে থেকে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরার নির্দেশ দেন, যাতে তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ খেলতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাইরের কোনও শক্তি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং তাদের ব্যবহার করা হবে।’
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর, বিএনপির উৎফুল্ল মেজাজ প্রসঙ্গে বলেন, ‘তারা (বিএনপি) মনে করে, অন্য কোথাও থেকে কেউ এসে তাদের আনন্দ-উল্লাস করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউই এটি করবে না (তাদের ক্ষমতায় আনতে) এবং কখনও কেউ তা করে না, বরং ব্যবহার করে। এটি (তাদের) ব্যবহার করবে, কিন্তু তাদের ক্ষমতা দেবে না।’ আওয়ামী লীগই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষা করেছে এবং দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজ তারা (বিএনপি) আন্দোলন-সংগ্রাম করবে। এক দিক থেকে এটি (ভিসানীতি) ভালো, যে তারা (বিএনপি) যদি অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা অবলম্বন করে এবং মানুষকে হত্যা করে, তবে তারা মার্কিন ভিসা পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘যাদের কথায় তারা (বিএনপি) নাচে, তারা তাদের (বিএনপি) ধ্বংস করবে। আমাদের কিছু করার নেই। এ নিয়ে আমাদের ভাবারও কিছু নেই।’
তিনি (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে) আগেই বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে বলে দিয়েছেন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘তারা কতো আন্দোলন করতে পারে, করতে দিন। আমরা কিছু বলবো না।’
তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সবসময় তাদের চোখ খোলা এবং ক্যামেরা চালু রাখতে বলেছেন, যাতে তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসংযোগ সহিংসতা, মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং মানুষ হত্যার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) উসকানি দিয়ে দেশের বাইরে ছবি পাঠাতে পারে। তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না।’
আওয়ামী লীগে দেশের জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরাই এদেশে গণতন্ত্র এনেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা থাকায়, বাংলাদেশে আজ অগ্রগতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শাহজাহান খান ও সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা উত্তর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। খবর বাসস।