ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ১৯৭১ সালে জামায়াতের বক্তব্য অনুচিত এবং এধরনের বক্তব্যের বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
ইউটিউবে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশো-তে এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
দশ বছর পর গত ১০ জুন রাজধানীতে সমাবেশ আয়োজনের পর আবারো বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনায় আসে দলটি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে কি আবার রাজনীতির মাঠে জামায়াত ইসলাম? এমন প্রশ্নকে সামনে রেখেই চলতি সপ্তাহের টকশোর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জামায়াতের নায়েবে আমীর জানান নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তার দল।
সেই সাথে তিনি আরো মনে করেন, ২০০৭ সালে নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে তৈরি জটিলতা সামলাতে বিএনপি আরো স্পষ্ট ভূমিকা রাখা দরকার ছিল। এমনকি তার দল জামায়াতে ইসলামীও আরো ভূমিকা পালন করতে পারতো।
ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দিনের প্রশ্ন ছিল, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী বলেছে ‘মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শত্রু এবং দুষ্কৃতিকারী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হয়েছে ভারতের দালাল।' এমন অবস্থানের জন্য জামায়াতে ইসলামীর আনুষ্ঠানিকভাবে, পরিষ্কার ভাষায় জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ উচিত কি না।
জবাবে মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের সময়ের যেসমস্ত বক্তব্য আপনি উচ্চারণ করছেন আমি মনে করি এগুলো খুবই অনুচিত উচ্চারণ। এই উচ্চারণকে কোনোভাবেই বৈধতা দেওয়ার, মেনে নেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আমি নিজেও এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাই।''
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা যারা নিউ জেনারেশনে আছি… উই আর অব বাংলাদেশ, উই আর ফর বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যদি কোনো আক্রমণ হয় তাহলে আপনি নিশ্চিত থাকেন, দিস ইজ ছাত্র শিবির, জামায়াতে ইসলামী এবং দিস ইজ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের যারা বিনা অস্ত্রে তাদেরকে মোকাবিলা করার জন্য সবার সম্মুখে এসে দাঁড়াবে।''
প্রশ্ন ছিল, আপনি মনে করেন কি না, জামায়াতের অবস্থান অফিসিয়াল হওয়া উচিত, আনুষ্ঠানিকভাবে এটি করা উচিত?
জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আপনার কথা মেনে নিয়েই আমি বলতে চাই যারা এসকল বক্তব্য দিয়েছে তারা আর পৃথিবীতেই নেই। বর্তমান জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার, স্বার্বভৌমত্বের, বাংলাদেশের গৌরবের বাইরে আর কোনো কিছুই চিন্তা করার নেই।''
আওয়ামী লীগের সাথে কোনো রাজনৈতিক আঁতাতে করছেন কি না জানতে চাইলে, ডা. তাহের জানান, এমন আঁতাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তার মতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় সে বিষয়টি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়েছে।