ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সেন্টমার্টিন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বের চন্দ্র রায়ের দেওয়া বক্তব্য ‘মিথ্যা, বানোয়াট এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করে এরে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস। তিনি বলেন, ‘কোনও ষড়যন্ত্রই জনগণের এই সংগ্রামকে ব্যাহত করতে পারবে না। জয় আমাদের হবেই।’
শনিবার (২৪ জুন) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবৃতিতে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘‘বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘সেন্টমার্টিন দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই দিয়ে দিতেন!’ অথচ ২০০১ সালে শেখ হাসিনা জাতির পিতার কন্যা হিসেবে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে, দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাননি। কিন্তু তখন দেশ ও জনগণের স্বার্থ ভূ-লুণ্ঠিত করে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপিই ক্ষমতায় গিয়েছিল।’’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শক্তির একমাত্র উৎস। সেন্টমার্টিন কেন, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জায়গা, কিংবা ন্যূনতম স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার কোনও ধরনের ইচ্ছা তিনি পোষণ করেন না।’
মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্র ও মুক্তির অতন্দ্র প্রহরী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের ফলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে বঙ্গপোসাগরে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একইভাবে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানার জটিলতা নিরসনের মধ্য দিয়েও বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
বিবৃতিতে অঅওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সুমহান স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র নিয়ে নিলর্জ্জ মিথ্যাচার করেছেন। বন্দুকের নলের মুখে অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে জোরপূর্বক রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান একাত্তরের ঘাতক, যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এবং বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট, দালাল ও সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে বিএনপি নামের দলটি সৃষ্টি করেছিল।’
মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধবিরোধী অপরাজনীতি, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এবং গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি, ইতিহাসের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানকে ইতিহাসের নায়ক বানাতে গয়েশ্বর চন্দ্রদের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সম্পর্কে লাগাতার মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রই হলো— এদেশের গণতন্ত্র বিকাশের প্রধান অন্তরায়। স্বৈরাচারী আদর্শে বিশ্বাসী ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি ও গণতন্ত্র কখনও একসঙ্গে অবস্থান করতে পারে না। ঐতিহ্যগতভাবে ‘গণতান্ত্রিক আদর্শ’ এবং ‘বিএনপি’ সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি সত্ত্বা।’’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বেই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের অবসান ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাঙালি জাতির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নাদর্শ বাস্তবায়নই শেখ হাসিনার রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রসরমান এই অভিযাত্রাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে ঐক্যবদ্ধ। কোনও ষড়যন্ত্রই জনগণের এই সংগ্রামকে ব্যাহত করতে পারবে না। জয় আমাদের হবেই।’