ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত তাকসিম এ খান।এবারেরটা নিয়ে তিনি ৭ম দফায় ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে ধারাবাহিক নিয়োগ পেলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকসিমকে পুনর্নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ শাখার উপসচিব মুস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন ১৯৯৬–এর ২৮ (২) ধারা মোতাবেক তাকসিম এ খানকে তাঁর বর্তমান চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর থেকে তিন বছরের জন্য ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে পুনর্নিয়োগ করা হলো। আগামী ১৪ অক্টোবর তাকসিমের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে।
গত ১১ জুলাই ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সভায় তাকসিম এ খানকে আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাবটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে প্রস্তাবের সারাংশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পরেই তাকসিম এ খানের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসা পরিচালিত হয় ১৯৯৬ সালে পাস হওয়া ওয়াসা অ্যাক্ট অনুযায়ী। এ আইনে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হচ্ছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ওয়াসা বোর্ডের প্রস্তাব বা সুপারিশ অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই পদে নিয়োগ দেয় সরকার। কিন্তু একই ব্যক্তি একই পদে সর্বোচ্চ কতবার বা কত বছর নিয়োগ পেতে পারেন, এ বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পেয়েছিলেন তাকসিম এ খান। এরপর পাঁচ দফায় তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। আগামী ১৪ অক্টোবর তাঁর ষষ্ঠবারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
গত ১২ বছরে তাকসিম এ খানের মাসিক বেতন বেড়েছে ৪২১ শতাংশ। ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিমের মাসিক বেতন বর্তমানে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সর্বশেষ করোনা মহামারির মধ্যে একলাফে ওয়াসার এমডির বেতন বাড়ানো হয় পৌনে ২ লাখ টাকা। তাকসিম এ খান, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
ব্যপক দুর্নীতি, অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকার পরও এই তাকসিমকে একই পদে রাখা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাবেক সভাপতি আকতার মাহমুদ বলেন, ওয়াসার পানি সরবরাহে উন্নতি হলেও কোনো টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়নি। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাতেও সফলতা নেই।
তাকসিম এ খান এমন অসাধারণ কিছু করেননি, যাতে তাঁকে আরও তিন বছর একই পদে রাখতে হবে। প্রথাগতভাবেও একজনের একই পদে দীর্ঘদিন থাকা উচিত নয়। এতে অন্যদের পথ রুদ্ধ হয় এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয় না।